নিলুফার
জীবনের অভিজ্ঞতা যেমন সবার থাকে সেরকম আমারও রয়েছে। এত মহামূল্যবান পত্রিকা ‘আত্মার আলো’য় সে অভিজ্ঞতা আমার মহান মুর্শিদ খাজাবাবা কুতুববাগী ক্বেবলাজানের দয়ায় প্রকাশের সুযোগ হলো। আমি সেজন্য নিজেকে অনেক সৌভাগ্যবতী মনে করছি। আসলে যখন থেকে আমার জীবন ও জগৎ বোঝার জ্ঞানের সূচনা হলো, সেই থেকে সৃষ্টিকর্তাকে জানবার এবং পাওয়ার তীব্রতর ইচ্ছা জাগ্রত হলো। আমি নিয়মিত ফরজ ও সারারাত নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াতসহ হাদিস সম্মত অজিফা আমল করতাম । পবিত্র হজ্ব পালন, রোজা, যাকাত এবং সম্পূর্ণরূপে পর্দা করে চলার পরেও যেন আমি অসম্পূর্ণ ছিলাম। এক সময়ে অনেক অসুস্থ হয়ে পড়লাম। নানা ধরনের চিকিৎসা করেও কোনো রোগ নির্ণয় করা গেল না। আমি হাতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়লাম। মন ও শরীর দুর্বলতর হয়ে উঠতে লাগল। আমি রাতে জায়নামাজে বসে নামাজ পড়তাম এবং মহান আল্লাহ্পাকের কাছে সুস্থতা কামনা করতাম। অনেকে ধারনা করল, জিনের আছর। আবার কেউ কেউ ধারণা করল জাদু-টোনা করা হয়েছে। যা-ই হোক, আমি জীবনের প্রতি এক রকম অতিষ্ট হয়ে উঠলাম। প্রতি রাতে মহান আল্লাহপাকের কাছে কাকুতি-মিনুতিসহ ফরিয়াদ করতাম যে, হয় পথ দেখাও, নতুবা এই জগৎ থেকে আমাকে তুলে নাও। এভাবে বহু রাত্রি নিদ্রাহীন চোখে কান্নাকাটি করেছি। এক সময় বেঁচে থাকার আগ্রহ নিঃশেষ হতে বসল। হঠাৎ এক রাতে আল্লাহপাকের মেহেরবানিতে দয়াল নবীজি (সাঃ) স্বপ্নযোগে পথ প্রদর্শন করলেন এবং মুর্শিদের দরবারে পেীঁছে দিলেন। কিছু দিনের মধ্যে এক আত্মীয়র উসিলায় কুতুববাগ দরবার শরীফে এলাম, আমার প্রাণপ্রিয় মুর্শিদের দর্শন লাভ করলাম। তাঁর নূরানি চেহারা দেখার সঙ্গে সঙ্গে আমি যেন অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠলাম। বাইয়াত গ্রহণ করলাম, বাবাজান যেসব আমল আমাকে দিলেন, মনোযোগ সহকারে শিখে ও জেনে নিয়ে তা নিয়মিত পালন করলাম। বাবাজান বলেছিলেন, মা আপনি সুস্থ হয়ে উঠবেন, কোনো ভয় নেই।’ আমি সত্যিই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠলাম। আমার মনে হলো সম্পূর্ণ নতুন জীবন ফিরে পেলাম এবং এটাই সত্য। আল্লাহপাকের দয়ায় তাঁর অলির হাতে বাইয়াত গ্রহণ করাই হলো নতুন জীবন লাভ। সেদিনের পর থেকে আজও আমার মুর্শিদ খাজাবাবা কুতুববাগীর পবিত্র কদমে আছি এবং তাঁরই কৃপায় থাকব।আসলে আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি, মানুষ যদি স্বচ্ছ দিলে সঠিক পথ খোঁজার চেষ্টা করে, অবশ্যই সৃষ্টিকর্তার দয়ায় তা পাবে। আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে অনেক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি যে, আল্লাহপাক এমন এক মহান অলির সাক্ষাৎ মিলিয়ে দিয়েছেন, আমি ধন্য-ধন্য। আমি ধন্য।