আলহাজ্ব মাওলানা সৈয়দ জাকির শাহ্ নকশ্বন্দি মোজাদ্দেদি
সূরা বাকারাহ্ (রুকু ৩২) ২৪৮ নং আয়াতে আল্লাহতা’আলা বলেন, অক্ব-লা লাহুম্ নাবিয়্যুহুম্ ইন্না আ-ইয়াতা মুলকিহী-আইঁ ইয়া’তিয়াকুমুত্ তা-বূতু ফীহি সাকীনাতুম্ র্মি রব্বিকুম্ অবাক্বিয়্যাতুম্ মিম্মা-তারাকা আ-লু মূসা-ওয়াআ-লু হা-রূনা তাহ্মিলুহুল্ মালা-য়িকাহ; ইন্না ফী যা-লিকা লাআ-ইয়াতাল্লাকুম্ ইন্ কুনতুম্ মু’মিনীন্। অর্থ: তাদেরকে তাদের নবী বললেন, তার বাদশাহীর নিদর্শন এই যে, তোমাদের নিকট তাবূত আসবে, যার মধ্যে তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে চিত্ত-প্রশান্তি রয়েছে এবং অবশিষ্ট বস্তু, সম্মানিত মুসা ও সম্মানিত হারুনের পরিত্যক্ত; সেটাকে ফেরেশতারা বহন করে আনবে। নি:সন্দেহে এর মধ্যে মহান নিদর্শন রয়েছে তোমাদের জন্য, যদি ঈমান রাখো। তাফসীরে কান্যুল ঈমান ও খাযাইনুল ইরফান টীকা (৫০৪)এ ‘তাবূত’ শামশাদ কাঠের তৈরি একটা স্বর্ণ-খচিত সিন্দুক ছিলো, যার দৈর্ঘ্য তিন হাত এবং প্রস্থ দুই হাত ছিলো। সেটাকে আল্লাহ তা’আলা হযরত আদম (আঃ)এর উপর নাযিল করেছিলেন।
এর মধ্যে সমস্ত নবী (আঃ)এর ফটো রক্ষিত ছিলো। তাঁদের বাসস্থান ও বাসগৃহের ফটো ছিলো এবং শেষ ভাগে হুজুর সৈয়দে আম্বিয়া (নবীকুল সরদার) সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের এবং হুজুর করীম (সাঃ)এর পবিত্রতম বাসগৃহের ফটো একটা লাল ইয়াকূতের মধ্যে ছিলো, যাতে হুজুর (সাঃ) নামাজেরত দ-ায়মান-অবস্থায় এবং তাঁর (সাঃ) চারপাশে সাহাবাহ কেরাম। হযরত আদম আলায়হিস্ সালাম সেসব ফটো দেখেছেন। সিন্দুকখানা বংশ পরস্পরায় হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম পর্যন্ত পৌঁছলো। তিনি এর মধ্যে তাওরীতও রাখতেন এবং তাঁর বিশেষ বিশেষ সামগ্রীও। ছবির ঘটনা কাযী ছানাউল্লাহ পানিপথী (রহ.) প্রণীত বিশ্বখ্যাত তাফসীরে মাজহারী ১ম খ-ে বর্ণিত আছে, যে সমস্ত মানুষ এই ছবি নিয়ে সমালোচনা করে, তারাই এই ছবি সর্বদা বহন করে ইবাদত বন্দেগী করেন বা চলাফেরা করেন। দেখা যায় যে, মানুষের জীবনে চলতে গেলে সর্ব প্রথম টাকা-পয়সার প্রয়োজন। সেই টাকাতেই ছবি আছে যা সকলেই ব্যবহার করেন।
দ্বিতীয়ত জাতীয় পরিচয় পত্রে ছবি আছে, বিদেশ ভ্রমণ বা হজ্ব করতে গেলে (পাসপোর্ট) ছবি লাগে, কর্মস্থলে ছবি লাগে, ছাত্র-শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠানে পরিচয়পত্র ও অন্যান্য কাজে ছবি লাগে, জমি ক্রয়-বিক্রয় করতে গেলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের ছবি লাগে, প্রতিটি সরকারি অফিসে রাষ্ট্র প্রধান বা সরকারের ছবি বাধ্যতামূলক রাখতে হয়। এমনকি ইসলামের নাভি-মূল সৌদি আরবের রাজা-বাদশাহর ছবি রিয়েলে (সৌদি মুদ্রা) মুদ্রিত আছে এবং তাদের ছবি অফিস-আদালতে বাধ্যতামূলক রাখতে হয়।
এ ছাড়াও যে সমস্ত আলেম সম্প্রদায় ছবি নিয়ে সমালোচনা করে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে বক্তৃতা করেন, সেখানে তাদেরই ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে। দৈনিক পত্রিকাসহ আরো কত শত গণমাধ্যমে নিজেদেরসহ সহস্র ছবি ছাপা হচ্ছে! এ নিয়ে তাদের কোনো জবাব আছে কি? এছাড়াও দেখা যায় যে, টিভি চ্যানেলে এবং পত্র-পত্রিকায় বাণিজ্যিকভাবে তাদের প্রকাশিত সিডি-ক্যাসেটের মোড়কে ছবি ব্যবহার করেন। তাই পাঠকগণ আপনারা একটু চিন্তা করে দেখুন, ছবির প্রয়োজন বা দরকার আছে কিনা।