এইচ মোবারক
স্বর্গীয় প্রেম চিরকালই সত্য। পৃথিবীর সবচেয়ে সহজ ও হৃদয়কারা কথাটি হচ্ছে প্রেম। হৃদয়ের গভীর থেকে প্রেম নামক বিষয়টির অঙ্কুরোধগম হয়ে থাকে। লালিত হতে থাকে খুবই যত্নে । প্রেমতত্ত্ব এই কথাটি মানুষের চিরকালীন সত্তার প্রকৃত রূপ বহন করে, তবে প্রেম প্রকৃত সত্তার বাহন তখনই হবে, যখন সত্যিকারের স্বর্গীয় আবেশ বেষ্টিত হয় অন্তর বা মন। এই প্রেমের মাধ্যমে মানবিক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আত্মায় স্বর্গীয় ঝর্ণাধারা বইতে থাকে এক মানুষ থেকে আরেক মানুষের অনুভবে। বহু দূরে তবু যেন খুব কাছে মনে হবে। এ প্রেমের ক্ষেত্রে- ‘ভালবাসি’ শব্দটি জিহ্বা অতিক্রম করে ঠোঁটের প্রান্তে কখনোই উচ্চারণের প্রয়োজন হয় না। কথোপকথন হয় হৃদয় থেকে হৃদয়ে। এমনই স্বর্গীয় প্রেমের জীবন্ত এক উপমা হচ্ছেন, দরদী মুর্শিদ কেবলাজান আমার মাশুক, আমার প্রেমিক খাজাবাবা কুতুববাগী।
প্রেম কথাটি মন থেকে মনে ধারণ করার জন্য প্রকৃতির কত উপমা, কত কাব্য, কত ছন্দ, কত গান, মনে হয় কতই না সহজ এ শব্দটি। তবু ‘সহজ কথা যায় না বলা সহজে’ হৃদয় নিংড়ানো সবচেয়ে আবেগের কথাটি সহজে বলা যায় না। এখানে আপন গুরুকে যখন হৃদয়ের আসনে বসানো সম্ভব হয়, ঠিক তখনই আপন গুরু দয়া করে প্রেমের মধুময়তার এক স্বর্গীয় অনুভূতি এনে দেন ভক্তের হৃদয়ে। জানা মতে এমন প্রেমের শিক্ষাগুরু খাজাবাবা কুতুববাগী অর্থৎ আমার মুর্শিদ কেবলা ব্যতীত অন্য কেউ হতেই পারে না। এমন এক মহা-মানবের গভীর সান্নিধ্য পেয়ে যে প্রেমের সূচনা হয়, আর তার মধ্যদিয়েই স্বার্থকতা পায় স্বর্গ থেকে নেমে আসা প্রেমের। তখন স্বর্গের সকল প্রেমময় সুধা নেমে আসে গুনাহগার ভক্তের অন্তরে। তখন একজন মুরিদের কাছে সারা বিশ্বভুবনই হয়ে ওঠে শান্তিময় এক নির্ভরতার ছায়াবীথি, যার কোন তুলনা কিংবা বর্ণনা হয় না। সন্তানের প্রতি মায়ের মমত্বের ধারায় রচিত হয় মাতৃপ্রেম। আর আশেকের অন্তরে মাশুকের আসন পাতার মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হয় স্বর্গীয় গুরু প্রেম। স্বর্গীয় এই প্রেম আসে নানাভাবে নানা বর্ণে। তাই এই প্রেমের সাথে অন্য কোন প্রেমের তুলনা করা সম্ভব না। যে প্রেম আমরা সাধারণত কাছ থেকে দেখতে পারি তা শুধুই দুনিয়াবি, এখানে মূলত বোঝার বিষয় হচ্ছে আসল গুরু প্রেমের সান্নিধ্যে পাওয়া যায় আলোকিত জ্ঞানের গভীরতা, ব্যক্তিত্বের পরিপূর্ণ মর্যাদা, হৃদয়ের গভীর থেকে বুঝে ওঠার ক্ষমতা। অবশ্যই একজন আশেক মুরিদ বা ভক্তের হৃদয়ে এই মন্ত্রটি লেপে রাখা অত্যন্ত জরুরী বলে মনে করি। আর তা হচ্ছেÑ গুরুপ্রেমেই শক্তি, গুরুপ্রেমেই মুক্তি। যে প্রেমকে আমরা কাছ থেকে দেখি আবার দেখিও না, বুঝতে বুঝতে জীবন তরী ডুবে যায়, যতই দিন যায় গভীরতা ততোই বাড়তে থাকে, এসকল হচ্ছে স্বর্গীয় মুর্শিদ প্রেমের সামান্য কিছু উপসর্গ মাত্র। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কজনে অর্জন করতে পেরেছি সেই অনুভূতি শক্তি? কজনে পান করতে পেরেছি গুরুপ্রেমের স্বর্গীয় সুধা? আমরা কি চাই না সত্যিকারের এই স্বর্গীয় প্রেমে নিজেকে মত্ত রাখতে? যদি আমাদের চাওয়া তা-ই তবে আর সময় ক্ষেপণ না করে, চলে আসতে পারেন আমার দরদী পীর নয়নের মণি, আধ্যাত্মিক গুরু খাজাবাবা হযরত সৈয়দ জাকির শাহ নকশবন্দি মোজাদ্দেদি কুতুববাগী কেবলাজানের পবিত্র দরবার, ফার্মগেট কুতুববাগ দরবার শরীফে (সদর দপ্তর)। আমি দৃঢ়তার সাথে বলতে পারি, আমার গুরুর কাছে কেউ যদি সাদা মনে পরম সত্ত্বা আল্লাহ্ কে পাওয়ার উদ্দেশ্যে উপস্থিত হয়, তবে তিনি বুঝবেন সত্যিকারের স্বর্গীয় আবেশ জড়ানো এক নূরের পতুল। যাকে এক নজর দেখলেই মনে হবে, মহান আল্লাহ্ যেন আরো কত সুন্দর! যাঁর সাথে সংযোগ মহা-সুন্দরের, মহা-রূপকার আল্লাহ্তায়ালার।
যা বলছিলাম, সকল কিছু সৃষ্টির মূল কারণই হচ্ছে প্রেম। মূলত এই প্রেমময় ভালোবাসার জন্যই মহান সৃষ্টিকর্তা মানুষ সৃষ্টি করেছেন। আর আমাদের প্রয়োজন মিটাতে সৃষ্টি করেছেন আরো কত মাখলুকাত। যেমন স্বর্গীয় আবেশে উদ্ভাসিত বিশ্ব ভ্রহ্মান্ডে যত প্রাণী-প্রকৃতিসহ যা কিছু আছে, সবার মধ্যে থাকা প্রেম ধরণীকে বাসযোগ্য করেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এক কথায় মানব জন্মের প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে পরবর্তী যত অধ্যায় বা যা কিছু আছে, তার সব কয়টি ক্ষেত্রই অত্যন্ত দক্ষতার সাথে জয় করা সম্ভব, যদি কোন ব্যক্তি বা আশেক মুরিদ তার আধ্যাত্মিক গুরুর কাছ থেকে প্রেম শিখতে সক্ষম হয়। এমন স্বর্গীয়প্রেম উৎসারিত হয় কেবল গুরুপ্রেমের বন্ধন-বলয়ের মাধ্যমে। অতএব এই প্রেম অর্জন করাই আমাদের একমাত্র আসল বা ফরজ কাজ। কিন্তু আমাদের কী দুর্ভাগ্য অতি সাধারণ জ্ঞানের অহঙ্কারেই যেন মাটিতে পা পরে না! আর তাই সত্য ও চির কল্যাণকর পথের দিশা পেয়েও আকড়ে ধরি না। শুধু অবুঝ শিশুর মতো হামাগুরি দিয়ে দিয়ে, অমূল্য সময় চলে যায়।