শরিফুল আলম
পৃথিবীতে পথহারা মানুষদের সুপথের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন যাঁরা, সেইসব কালজয়ী মহা সূফী-সাধক আল্লাহর অতি নৈকট্যকারী কামেল পীর-মুর্শিদদের নামে কালে কালে বিরুদ্ধাচারণ হয়ে আসছে এটা নতুন নয়। তবে বিরোধীরা কখনই সফল হতে পারেন নাই। যাঁদেরকে মহান আল্লাহ নিজ জ্ঞান ও গুণের ক্ষমতা দিয়ে প্রেরণ করে থাকেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কামান দাগিয়েও কেউই সফল হতে পারেন নাই বরং তারাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। আর বিরোধীরা বিরোধ করবেই, কিন্তু তারাও এক সময় কামেল পীরের কাছে নত হয়ে বাইয়াত নিয়েছেন, এমন বিস্তর ঘটনাও আমরা জানি। যারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে সত্যকে আড়াল করে সাময়িক ফায়দা হাতায়। এক সময় তারা নিজেদের বিবেকের কাছে ধরা খেয়ে, কামেল পীরের আছে ছুটে যান ঈমান রক্ষার মন্ত্র নিতে। এ প্রসঙ্গেই প্রত্যক্ষ একটি ঘটনা বলি, গত ২২ নভেম্বর ২০১৬ মঙ্গলবার জামারপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ কামিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে খাজাবাবা কুতুববাগী কেবলাজানের শুভাগমন উপলক্ষে, স্থানীয় আশেকান-জাকেরান ভাইয়েরা আয়োজন করেছিলেন ‘জাকের ইজতেমা ও দোয়ার মাহফিল’ আয়োজকদের মধ্যে এ নিবন্ধকারও একজন। মাদ্রসা প্রাঙ্গণে সূফীবাদের মাহফিল করবো এ কথা প্রচার হবার পরপরই, এলাকার ওহাবী-খারেজীপন্থি হাফেজ-কারী মোল্লা-মৌলভীসহ আরো কয়েকজন জোট হয়ে মাহফিলের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করে দিলো। গয়রহ সকল পীর-মুর্শিদের নামে শুক্রবার জুমা নামাজের দিন মসজিদে মসজিদে মিথ্যা গীবত করলো। শুধু এ করেই ক্ষান্ত হয় নাই তারা লিফলেট ছাপিয়ে সেগুলো মানুষের হাতে হাতে বিলি করলো। এরপর এলাকার চেয়ারম্যান ও দেওয়ানগঞ্জ থানার ওসি সাহেবের কাছেও গিয়েছিলো যাতে তারা এ মাহফিলের অনুমতি প্রদান না করেন। সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালা এসব চক্রান্তকারীদের সফল হতে না দিয়ে, তাঁর অলি-বন্ধুর সম্মান আরো বহুগুণে বাড়িয়ে দিলেন। সেদিন আমাদের প্রচারের তুলনায় তাদের মিথ্যা প্রচারের কারণেই বহুগুণে বেশি মানুষ সমবেত হয়েছিল। কারণ, মানুয়ের মধ্যে এ কৌতুহল জন্মেছিল যে, যাঁর নামে দিকভ্রান্তরা অপপ্রচার করলো সেই মানুষকে এক নজর দেখার জন্য এবং তাঁর বয়ান-বক্তব্য শোনার জন্য। কেবলাজানকে দেখে এবং তাঁর পবিত্র জবানে মহান আল্লাহর বাণী ও রাসুল (সঃ) এর সত্য তরিকতের পথে কেন আসতে হবে এবং ইহকাল ও পরকালের জন্য এ পথের সফলতা কী? সে সব বিষয়ের ওপর মূল্যবান আলোচনা শুনে সবার মধ্যেই একটা সত্য আবহ আর প্রশান্তি বিরাজ করছিল। হাজার হাজার নারী-পুরুষ খাজাবাবা কুতুববাগী কেবলাজানের হাতে বাইয়াত নিয়েছেন। সবচেয়ে অবাক বিষয় ছিল, সেদিন অপপ্রচারকারীদের অনেকেই খাজাবাবার কাছে তওবা করে বাইয়াত নিয়েছেন। দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মিসেস সেলিনা আকতার পর্দার মাধ্যমে কেবলাজানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বলেনÑ ‘চক্রান্তকারীদের কয়েকজন আমাকেও বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে বলেছিল, ‘আপনি মাহফিলে যাবেন না, পীরের কাছে যাওয়ার দরকার নাই, পীরের কাছে কেন যাবেন?’ আমি তাদের কথায় কান না দিয়ে মাহফিলে এসেছি এবং কুতুববাগী হুজুরের সাক্ষাৎ পেয়ে আমি ধন্য হয়েছি। আল্লাহর এই অলি-বন্ধু আমার কাছে এক পরম পিতার মতো।’ মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জনাব আবুল কালাম আজাদ সাহেব ওইসব ইয়াজিদ বংশীয়দের চক্রান্তের কথা তুলে ধরে বলেনÑ ‘চিরকাল সত্যের জয় হয়ে আসছে। আমরা বুজুর্গ মানুষের কাছে যাবো, তাঁদের দেখানো পথে চলার চেষ্টা করবো। নিজেদের বিবেক বুদ্ধি দিয়ে সত্যকে গ্রহণ করবো আর মিথ্যাকে বর্জন করবো। খাজাবাবা কুতুববাগী সত্যিই একজন কামেল মানুষ, তাঁকে দেখলে এ কথা অস্বীকার করা ভুল হবে।’ মাহফিলে আখেরী মোনাজাতে কেবলাজান সকলের জন্য দোয়া করেন। চক্রান্তকারীদের জন্যও দোয়া করেন যাতে তারাও সুপথের সন্ধানলাভ করতে পারেন।
লেখক : ব্যবসায়ী ও খাদেম, কুতুববাগ দরবার শরীফ