খালেদ ফারুকী আল মোজাদ্দেদি
পবিত্র শবে মেরাজের ঘটনা মুসলমানরা চরম ও পরম সত্য বলেই জানেন ও বিশ্বাস করেন। পবিত্র শবে মেরাজে আমাদের প্রিয় মহানবীকে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সপ্তম আসমানের উপরের জগতের বিস্ময়কর অজানা অনেক কিছুই দেখিয়েছেন। তবে মানবজাতির জন্য সবচেয়ে বড় যে উপহার মেরাজ থেকে নিয়ে এসেছেন, তা হলো নামাজ। সঠিকভাবে নামাজ আদায়ের শিক্ষা দিয়ে থাকেন, নকশবন্দিয়া-মোজাদ্দেদিয়া তরিকার এ জামানার প্রধান ধারক ও বাহক হযরত সৈয়দ জাকির শাহ নকশবন্দি মোজাদ্দেদি কুতুববাগী কেবলাজান।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মানবজাতির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে দেওয়া একটি বড় উপহার, একটি অনন্য নিয়ামত। নামাজের মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের মুখোমুখি হয় মানুষ। নামাজে দাঁড়ানোর পর মানুষ সরাসরি আল্লাহমুখি হয়ে যান। দুনিয়ার কোন কিছুই আর তার খেয়ালে থাকে না। তবে অন্তরাত্মা দিয়ে পরম করুণাময়ের ইবাদত করা ইহজাগতিক সত্ত্বায় নিমগ্ন দুনিয়াদারির সাধারণ মানুষের পক্ষে কতটা সম্ভব তা নামাজ আদায়কারী ব্যক্তি ছাড়া আর কারো পক্ষে অনুধাবন করা সম্ভব না। নামাজের মাধ্যমে মানুষ দৈনিক পাঁচবার আনুষ্ঠানিকভাবে আল্লাহর কাছে হাজির হন। মানুষ নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে আনুগত্য করে, ক্ষমা চায়, আশ্রয় চায়, প্রশ্রয় চায়, মঙ্গল চায়- এক কথায় সাধারণ মানুষের অন্তঃকরণের সরল প্রার্থনা নামাজের মাধ্যমেই আল্লাহর কাছে করে। তবে জ্ঞান তাপসদের কথা আলাদা।
নামাজ শুধু পড়ার বিষয় না। এটি পূর্ণাঙ্গরূপে আত্মস্থ করার ব্যাপার, উপলব্ধির ব্যাপার। আত্মপোলব্ধি না থাকলে নামাজে নিজেকে সঁপে দেওয়া বা নামাজের আনন্দ আস্বাদন করা সম্ভব না। এই ধরণের নামাজ শিক্ষা পৃথিবীর সবখানে পাওয়া যায় না। কামেলপীর বা সত্য পথের আদর্শ নির্দেশক নামাজের স্বাদ অনুভবের শিক্ষা দিয়ে থাকেন। আর এটি পূর্ণ মাত্রায় চর্চা হয়ে থাকে কুতুববাগ দরবার শরীফে। কেবলাজান নিজে শিক্ষা দিয়ে থাকেন, কীভাবে নামাজ পড়তে হবে। নামাজের মাধ্যমে কীভাবে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের আশ্রয়ে অনুগ্রহ পাওয়া যায়। অন্য যেকোন দরবারের তুলনায় কুতুববাগ দরবার শরীফ বেশ ভিন্ন বৈশিষ্টের। এখানে শতভাগ শরিয়তের শিক্ষা দেওয়া হয়। শরিয়ত, তরিকত ও হাকিকতের সিঁড়ি বেয়ে কীভাবে মারেফতের পরম স্তরে উপনীত হতে হয়, সে শিক্ষাই খাজাবাবা কুতুববাগী কেবলাজান দিয়ে থাকেন। পবিত্র শবে মেরাজে মানুষের জন্য অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপহার যে সালাত বা নামাজ, তা যে কোন বিবেকবান মানুষমাত্রেই স্বীকার করবেন। নামাজের স্বাদ আহরণ করার জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন আপন আপন কলব সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা, তথা কলব চিনে নেওয়া। বছরের পর বছর মহান আল্লাহর একাত্ববাদের এই কাজটি করে আসছেন জামানার হাদি খাজাবাবা কুতুববাগী পীরকেবলাজান। মহান এই তাপসগুরুর সান্নিধ্যে আসলে প্রথমেই কলবের শিক্ষা দিয়ে থাকেন। নামাজের সময় যেভাবে খেয়াল কলবের দিকে সন্নিবেশিত রাখতে হয়, সেই শিক্ষা দেন খাজাবাবা কুতুববাগী কেবলাজান। আর এই শিক্ষাই মানুষকে নিয়ে যায় নামাজের স্বাদ আস্বাদনের দিকে। হুজুরি দিলে নামাজ আদায়ের জন্য প্রতিটি ওয়াক্তের নামাজে নির্দেশনা দেয়া হয় এই দরবার শরীফে। হুজুরি দিলে নামাজ মানুষকে নিয়ে যায় পরম স্তরে, যার আকাক্সক্ষা থাকে জ্ঞানবান প্রতিটি মানুষের বিকশিত চেতনায়।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক