আলহাজ মাওলানা হযরত সৈয়দ জাকির শাহ্ নকশবন্দি মোজাদ্দেদি কুতুববাগী
মহান আল্লাহর কাছে হযরত আদম (আঃ) অতি সম্মানিত।তাই আল্লাহ আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করে সকল ফেরেশতাকে সিজদা করার আদেশ দেন।
পবিত্র কোরআনের বাণী, ‘ওয়া ইয্ ক্বুলনা লিল মালা-ইকাতিস জুদূ লিআ-দামা ফাসাজ্বাদূ ইল্লা ইব্লিস; আবা ওয়াস্তাকবারা ওয়া ক্া-না মিনাল কা-ফিরীন’। অর্থ: আমি যখন সমস্ত ফেরেশতাদের আদেশ করলাম, তোমরা সকলে আদমকে সেজদা কর, তখন ইবলিশ ব্যতীত সকল ফেরেশতা সেজদা করল। সে (ইবলিশ) আল্লাহর হুকুমকে অমান্য করল। সুতরাং সে কাফেরদের অর্ন্তভুক্ত হল। (সূরা : আল বাকারাহ্, আয়াত- ৩৪)
মাতা-পিতা, ওস্তাদ-গুরু-পীর-মুর্শিদকে ভক্তি করা, শ্রদ্ধা করা, তাজিম করাকে সমাজে কিছু সংখ্যক মানুষ সমালোচনা করে থাকে। তাদের ধারণা হলো, এসব গুনাহ্রে কাজ এবং ‘বেদাত’ বলিয়া থাকে। এই ভক্তি-শ্রদ্ধার মর্মাথ যদি তারা জানতো এবং বুঝতে পারতো, তাহলে তারা সমালোচনা করতো না। নিন্দাও করতো না। হে পাঠকগণ, আপনারাই বিবেচনা বা চিন্তা করিয়া দেখুন, যারা এ সমস্ত নেক কাজকে অস্বীকার করে, কোরআন-হাদিসকে অস্বীকার করে এবং তারা নিজেরাও তা করে না, অন্যকেও করতে বাধা প্রদান করে থাকে, তারা কতই না বড় পাপী।
সূরা: নামল-এর ৩৮, ৩৯ ও ৪০ নং আয়াতে মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘ক্বা-লা ইয়া- আইয়্যুহাল মালাউ আইয়্যুকুম ইয়াতীনী বি আরশিহা ক্বাবলা আই ইয়া তূনী মুসলিমীন’। অর্থ: হে আমার পরিষদবৃন্দ! তোমাদের মধ্যে এমন কে আছ, যে রানী বিলকিস আসার আগে তাহার সিংহাসন আমার নিকট নিয়ে আসতে পার? (আয়াত- ৩৮)।
‘ক্বা-লা ইফরীতুম মিনাল জ্বিন্নি আনা আ-তীকা বিহী ক্বাবলা আন তাকুমা মিম ম্াক্বা মিক, ওয়া ইন্নী আলাইহি লাক্বাওওয়য়িয্যূন আমীন’।
অর্থ: ইফ্রীত নামক মহা শক্তিশালী এক জিন বলিল, আমি সিংহাসন আপনার সম্মুখে কিছু সময়ের মধ্যে আনিতে পারিব এবং আমি সিংহাসন আনার মতো ক্ষমতাবান, (আয়াত- ৩৯)।
‘ক্বা-লাল্লাযী ইন্দাহূ ইলমুম মিনাল কিতাবি আনা আ-তীকা বিহী ক্বাবলা আই ইয়ারতাদ্দা ইলাইকা ত্বারফুক’।
অর্থ: হযরত সোলায়মান (আ:)-এর দরবারে এক বুর্জুগ ব্যক্তি (আসিফ ইবনে বারখিয়া), যার মধ্যে লওহে মাহফুজ-এর এলেম ছিল এবং তিনি আধ্যাত্মিক জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তিনি বলিলেন, আমি (বিলকিস রানীর) সিংহাসন আনিয়া দিব। আপনি চক্ষু বন্ধ করবেন, খুলিয়া দেখবেন সিংহাসন আসিয়া গেছে (আয়াত- ৪০)।
মানুষের মধ্যে কিছু কিছু মানুষ আছে, যারা অসাধারণ। আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত ও দিদারপ্রাপ্ত, তারা আল্লাহকে চিনেন এবং আল্লাহতায়ালাও তাদেরকে চিনেন। তারা যদি আল্লাহর কাছে কারো জন্য কিছু দাবি করে বসেন বা চান, আল্লাহ তাতে রাজি হইয়া যান। ইহা সূরা নামল দ্বারা প্রমাণিত। হে পাঠকগণ! আপনারা বিবেচনা করিয়া দেখুন, মহান আল্লাহতায়ালা যাদের পছন্দ করেন, তাদের এলমে লাদুন্না ও আসমানী জ্ঞানের দ্বারা অনেক অলৌকিক ক্ষমতা দান করেন, যার দ্বারা তারা অনেক অসাধ্য কাজ সাধন করিয়া থাকেন। যা সূরা নামলের মধ্যে প্রমাণ পাওয়া গেল। পবিত্র কোরআনের এই হুকুম কিয়ামত পর্যন্ত চলিতে থাকিবে।