কবির হাসান
প্রাণপ্রিয় মুর্শিদ ইহকাল ও পরকালের বান্ধব খাজাবাবা কুতুববাগী ক্বেবলাজানের সঙ্গে পরিচয় আমার জীবনে এক অসাধারণ ঘটনা। জীবনের কঠিন সময়ে তাঁর সঙ্গে আমার দেখা। তখন আমি নানা মুখী হতাশায় ডুবন্ত। পোশাক তৈরী কারখানায় (উৎপাদন কর্মকর্তার) পদে চাকুরী করি। আমার ডান পায়ের নার্ভসগুলোর ব্যাথায় হাঁটতে পারতাম না। দিনের পর দিন অফিস থেকে ছুটি নিতে হত। ব্যাথায় নার্ভসগুলো ফুলে যেত, প্রায় তিন/চার বছর ধরে এ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি, কবিরাজী চিকিৎসা করিয়েছি কোন ফল হয়নি। এক পর্যায়ে কোম্পানির কর্তৃপক্ষ আমার অবস্থা দেখে সিদ্ধান্ত নেন, পা অপারেশন করাবেন, এ জন্য দিন তারিখও ঠিক করা হয়। সেই সময় এলাকায় এক পরিচিত ভাই তাঁর নাম ইসহাক, তিনি কুতুববাগ দরবার শরীফের পুরাতন জাকের ভাই। অনেক দিন যাবত বাবাজানের সান্নিধ্যে আসা-যাওয়া করছেন। হঠাৎ তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হয়। কথা প্রসঙ্গে তাঁর কাছে বললাম শরীরিক সমস্যার কথা। তিনি আমাকে সরাসরি নিয়ে এলেন বাবাজানের কদমে। প্রথমে বাবাজান আমাকে তাঁর পবিত্র শাহাদাৎ আঙুল দিয়ে, আমার বাম বুকের দুই আঙুল নিচে যেখানে লতিফায়ে ক্বলব, সেখানে চিহ্ন করে দেখিয়ে দিলেন। তওবা পড়ালেন। আমি নকশবন্দিয়া-মোজাদ্দেদিয়া তরিকার অর্ন্তভুক্ত হলাম। বাবাজান তাঁর পবিত্র হাত দিয়ে আমার ডান পায়ের ফুলা স্থানে স্পর্শ করলেন, দেখলেন এবং বললেন, ভালো হয়ে যাবে, আপনি লঙ্গরখানার জন্য একটা ছদগা দিয়ে দিবেন আর তবারক খেয়ে যাবেন। নামাজ পড়বেন, তরিকার কাজ করবেন।
সেদিন থেকেই ক্বেবলাজানের আদেশ পালন করতে থাকি এবং ধীরে ধীরে বিনা ঔষধে আজ আমি সম্পূর্ণ সুস্থ! স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারছি কোন সমস্যা নেই। ক্বেবলাজানের সান্নিধ্যে এসে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের শেষে বাবাজানের দেয়া অজিফা পালন করি, আমার মুর্শিদের দোয়া আর আল্লাহতা’লার অশেষ রহমতে আমার জীবন বদলে গেল। শুকরিয়া আল্লাহর দরবারে। খাজাবাবা কুতুববাগীর সান্নিধ্যে না এলে, এ জীবন অন্য রকম হত, যা কারো কাম্য হতে পারে না। ক্বেবলাজান হুজুর অল্প দিনের মধ্যেই আমাকে আপন করে নিলেন। প্রথম দিনেই ক্বেবলাজানের প্রতি আমার যে ভক্তি ও বিশ্বাস মনে দানা বেঁধেছিল, দিনে দিনে তা কেবল বেড়েই চলেছে। ছাত্র জীবনে আখেরী নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ)-এর জীবনাদর্শ পড়ে তাঁকে নিয়ে অন্তরে, যে ছবি আমি এঁকেছিলাম সে ছবিই যেন বাবাজানের মধ্যে খুঁজে পেলাম! যাঁর নূরাণী চেহারা মোবারকের দিকে তাকালে ক্ষুধার জ্বালা থাকে না, তৃষ্ণা মিটে যায়। এক অনাবিল প্রশান্তিতে অন্তর জুড়িয়ে যায়, তখন দুনিয়ার সব কিছু তুচ্ছ মনে হয়। খাজাবাবা কুতুববাগীর রাঙা চরণে আমি এই ভিখারীকে যেন দয়া করে, মায়া করে, গোলাম হিসাবে কবুল করেন। আমিন।
লেখক : মোঃ কবির হাসান
শেওড়াপাড়া, মিরপুর, ঢাকা।