হাদিস শরীফে পুরুষদের চুল রাখার তিন ধরণের নিয়মের কথা উল্লেখ আছে। রাসুলুুল্লাহ (সঃ) সাধারণ বাবরী চুল রাখা পছন্দ করতেন এবং তিনি নিজেও বাবরী চুল রাখতেন। তিন রকম পদ্ধতিতে চুল রাখার নিয়ম এক- উভয় কাঁধ বরাবর। দুই- ঘাড়ের মাঝামাঝি। তিন-উভয় কানের লতি পর্যন্ত (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৪১৮৩-৪১৮৭)।
রাসুলুুল্লাহ (সঃ) এহরাম থেকে হালাল হওয়ার জন্য মাথা মু-াতেন। এছাড়া তিনি কখনো মাথা মু-াননি। এ সময় তিনি মাথা মু-ানোকে চুল ছোট করে রাখার উপর প্রাধান্য দিয়েছেন। এজন্য ইমাম তাহতাবী (রহঃ) বলেন, এহরামের সময় মাথা ন্যাড়া করাও সুন্নাত। আর কিছু অংশ মু-ানো ও কিছু রেখে দেওয়া নিষেধ। মু-াতে ইচ্ছে না করলে চুল ছোট রাখা যেতে পারে।’ আলেমগণ তিন পদ্ধতিতে বাবরী রাখাকে সুন্নাত আর মাথার চুল ছোট করে রাখা ও এহরামের সময় মাথা মু-ানোকে জায়েজ বলেন। এ তিনপ্রকার চুল রাখার পদ্ধতির ভিন্ন ভিন্ন নাম আছে যেমন, লিম্মা, জিম্মা এবং ওফরা। এছাড়া সামনে বা পেছনে লম্বা রাখা অথবা ডানপাশে বা বামপাশে ছোট-বড় করে চুল রাখাকে জায়েজ মনে করেন না। এক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয় হল, চুলের কাটিং ভিন্ন কোন জাতিসত্তার অনুকরণে হলে, তা-ই নাজায়েজের মধ্যে শামিল হবে, (মাহমুদিয়া ২৭/৪৬০, মিশকাত- ৩৮১, ২৩২, ৩৮০)। তা ছাড়া কিছু লোক আছেন যারা মাথার চুল একেবারে ছোট ছোট করে ছেঁটে চামড়ার সঙ্গে মিশিয়ে রাখেন, এ ধরণের চুলধারীকে মোনাফেক বলেও আখ্যায়িত করা হয়েছে। তাই এ কথা সবার জানা দরকার যে, আল্লাহতায়ালা ইচ্ছা করলে সবরকম অপরাধীর গুনাহ মাফ করে দিতে পারেন, শুধু মোনাফেকের গুনাহ মাফ করবেন না। কারণ, মহান আল্লাহতায়ালা বলেছেনÑ ‘মোনাফেক, আমি আল্লাহর শত্রু।’ আমরা কি চাই কেউ আল্লাহর সঙ্গে শত্রুতায় লিপ্ত হই? নিশ্চয়ই তা চাই না।
মহিলাদের চুল রাখার নিয়ম
ইসলাম ধর্মের বিধান অনুযায়ী মেয়েদের ক্ষেত্রে মাথা মু-ন করা বা চুল কেটে ছেলেদের মতো করে রাখা সম্পুর্ণ নিষেধ। আবার অনেক বড় রাখাও উচিত নয় কারণ, গোছলের সময় পানি সে চুলের সবখানে পৌঁছানোও কষ্টকর হয়। বরং পিঠ বা কোমর পর্যন্ত রাখাই উত্তম। সে মতে কোমরের নিচের অংশ কেটে ফেলা জায়েজ আছে। অবশ্য না কাটলেও কোনো সমস্যা নেই। (তিরমিজি শরীফ ১/১৮২, মুসলিম শরীফ ১/১৪৮)। কিন্তু ইদানিং কালে অনেক মা-বোনকেই দেখা যায়, তারা মাথার চুল কেটে বিভিন্ন সাইজে রাখেন, যেমন বয়কাট ও ববকাট আপাত দৃষ্টে তাদের কাছে এটা ফ্যাশন হলেও বস্তুত পক্ষে ইসলাম ধর্মের অনুশাসনের দিক দিয়ে এটা অবশ্যই নাজায়েজ। মুসলমান হিসাবে রাসুলুল্লাহ (সঃ)-এর সুন্নতকে পালন করাই আমাদের আসল কাজ। আমরা যদি ভিন্ন ধর্মের লোকদের অনুসরণ করি তবে রাসুল (সঃ)-এর উম্মত বলে দাবী করা আমাদের জন্য বিপদ হয়ে দাঁড়াবে।