খালেদ ফারুকী আল মোজাদ্দেদী
শুধু মুসলিম ধর্মাবলম্বী নয়, এর আগে নাজিল হওয়া সকল ধর্মের মানুষের জন্য রোজা অবশ্য পালনীয় বা ফরজ ছিলো। সমাজের বৃহত্তর সাধারণ মানুষ রোজা মানে প্রধানত ও প্রথমত বুঝে থাকেন পানাহার থেকে বিরত থাকা। পানাহার থেকে বিরত থাকা রোজা পালনের বৃহত্তর সংযম পালনের একটি অংশ মাত্র। এর পরও রয়েছে আরও নানা সংযম। নানান সংযমের সমন্বয়েই পবিত্র রমজান। রমজানের নানা সংযমের শিক্ষা বছরব্যাপী দেয়া হয় কুতুববাগ দরবার শরীফে।রোজার সার্বিক অর্থ হলো সংযম। জীবনের সকল আচারে বাহুল্য ব্যবহার পরিত্যাগ করে সংযম পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে রোজার মাধ্যমে। মূলত সারাবছরই রোজার ন্যায় যেন মানব জাতি একটি সুষ্ঠু নিরাপদ জীবন-যাপন করতে পারে তার একটি নমুনা মাস মাহে রমজানে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন চান, আমরা সবাই সারাবছর রোজার ন্যায় সংযমী জীবন-যাপন করি। রোজায় সংযম পালনের অন্যতম অংশ দিনের নির্দিষ্ট সময়ে পানাহার থেকে বিরত থাকা। আরও রয়েছে নানা সংযম। এগুলোর মধ্যে রয়েছে মুখের সংযম, দৃষ্টির সংযম, জবানের সংযম, সময়ের সংযম (সময় অপব্যয় না করে বেশি করে আল্লাহ-রাসুলের নাম নেওয়া) যাপিত জীবনের সংযমসহ আরো অনেক কিছু। উল্লেখ্য- এ সকল বিষয়ই সারাবছর কুতুববাগ দরবার শরীফে শিক্ষা দেওয়া হয়ে থাকে। দরবার শরীফের পীর কেবলাজান খাজাবাবা শাহসূফী আলহাজ মাওলানা হযরত সৈয়দ জাকির শাহ নকশবন্দি মোজাদ্দেদি কুতুববাগী সারাবছর ভক্তদের অতি যতœ ও ধৈর্যের সঙ্গে এই শিক্ষাগুলো দিয়ে থাকেন। বছরের প্রায় প্রতিদিনই খাজাবাবা কুতুববাগী সাধারণ মানুষ তথা ভক্তদের দয়াল নবী (সঃ) এর শিক্ষাদানের জন্য সময় দিয়ে থাকেন। সংযমের মাসে যেভাবে বেশি বেশি করে আল্লাহ রাসুলের নাম নেওয়ার কথা বলা হয়েছে, সারাবছরই এই শিক্ষা দেওয়া হয় কুতুববাগে। তা ছাড়াও রয়েছে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত, দোয়া কবুলের রাত হিসেবে গুরুরাত্রি পালন করা হয়। এই রাতে খাজাবাবা কুতুববাগী কেবলাজান এশার নামাজের পর থেকে ভোররাত পর্যন্ত জেগে থেকে ভক্তদের সঙ্গে নিয়ে আল্লাহ-রাসুলের নাম ধরে ডাকার শিক্ষা দিয়ে থাকেন। এটি আমাদের জীবনের জন্য এক পরম শিক্ষা। কেউ এ শিক্ষা গ্রহণ না করলে তার জীবন একেবারে অপূর্ণই থেকে যায় বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি। আল্লাহ ও রাসুল (সঃ) যে আমাদের এতো কাছেই আছেন এবং আল্লাহ ও রাসুল (সঃ)কে এত সুন্দরভাবে যে ডাকা যায়, সেই শিক্ষাও দিয়ে থাকেন খাজাবাবা কুতুববাগী।খাজাবাবার শিক্ষার উল্লেখযোগ্য দিক হলো, জীবন যাপনের নিশানা ঠিক করার শিক্ষা। বাবাজান শিক্ষা দিয়ে থাকেন- জবানের শিক্ষা, তথা সংযমের শিক্ষা। কোন ধরনের কথা বলা উচিত না, তা বেশ জোর দিয়ে সারা বছর শিক্ষা দেন খাজাবাবা কুতুববাগী। তিনি বলেন, অন্যের বিরুদ্ধে লাগার আগে নিজের বিরুদ্ধে লাগতে হবে। তিনি বলেন, জীবনের সবচেয়ে বড় জেহাদ হলো, নিজের বিরুদ্ধে লাগ- নিজের দোষত্রুটি দেখা। নিজেকে সংশোধন করার ওপরই খাজাবাবা জোর দিয়ে থাকেন। এটিই তার সবচেয়ে বড় শিক্ষা। এটি কি জীবনের অন্যতম বড় সংযম নয়। জীবনাচারে সংযমের ওপর খাজাবাব সারা বছরই জোর দিয়ে থাকেন। মুখের সংযম, জবানের সংযম, খাদ্যের সংযম, বেশি বেশি করে আল্লাহ রাসুলের নাম নেওয়া। অন্যভাবে বললে, রোজার যে শিক্ষা, তা সারা বছরই কুতুববাগ দরবার শরিফে চর্চা করা হয়। আর এই চর্চার নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন খাজাবাবা কুতুববাগী। তাঁর নেতৃত্বে অগনিত আশেক-জাকের বছরের পর বছর ধরে আত্মসংযমের শিক্ষা নিয়ে আলোকিত করে তুলেছেন নিজেদের পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিকতা। এই সংযমই শুদ্ধ জীবনাচার, যার জন্য তৃষ্ণার্ত মানুষের অন্তপ্রাণ চেষ্টা সৃষ্টির পর থেকেই।