আলহাজ মাওলানা হযরত সৈয়দ জাকির শাহ্ নকশবন্দি মোজাদ্দেদি কুতুববাগী
ইজতেমার আভিধানিক অর্থ জমায়েত হওয়া, একত্রিত হওয়া বা সমবেত হওয়াকে বোঝানো হয়েছে। ইংরেজিতে ইজতেমাকে গ্রেট কনফারেন্স, কনগ্রেগেশন, স্প্রিচুয়াল মিটিং, সেইন্ট অর্গানাইজিং, হায়ার ডিসিপ্লিনিং ইত্যাদি বলা হয়। যে ইজতেমায় দেশ-জাতি, দল-মত, গরিব-ধনী নির্বিশেষ সব শ্রেণির জিকিরকারী মানুষের দ্বারা অনুষ্ঠিত হয়, তাকে বিশ্বজাকের ইজতেমা বলে।
বিশ্বজাকের ইজতেমার শিক্ষা হলো আত্মশুদ্ধি লাভ করা। সকল জাতি ধর্মের জন্য তথা বিশ্বশান্তির জন্য, ইলমে তাসাউফের আলোকে বিশ্ব মানবতার কল্যাণে বিশ্বজাকের ইজতেমা। এখানে সবার জন্য আত্মশুদ্ধির ব্যবস্থা করা হয়, আত্মিক উন্নতি ঘটানোর ইজতেমা। এখানে মানুষের আত্মার রোগের চিকিৎসা করা হয়। মানুষের ভিতরের আত্ম অহংকার, কু-রিপু, হিংসা-বিদ্বেষ, কৃপণতা, অলসতা, অভদ্রতা, মূর্খতা, হুজ্জুতি ও গোড়ামী ইত্যাদিকে মহাস্রষ্টার নামে জিকির ও সাধনার মাধ্যমে পরিবর্তন করে, পর্যায়ক্রমে আত্মশুদ্ধির ব্যবস্থা করে ন্যায়-নিষ্ঠা, বিনয়, ভদ্রতা অর্জনের পথ দেখানো হয়। মানুষকে আদব-আজিজি, সভ্য, দানশীল, কর্মঠ, জ্ঞানী ও আমলধারী মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা হয়। নিয়মিত সাধনার ফলে মানুষের আত্মা একটি বিশেষ শক্তিপ্রাপ্ত হয় এবং মহান স্রষ্টার সান্নিধ্য লাভে সচেষ্ট হয়। ফলে নিজে শান্তিপ্রিয় হয়ে যায়, অপরকে শান্তিপ্রিয় বানাতে চায় এবং পরম শান্তি লাভ করে। সৃষ্টির শুরু থেকে এ শান্তি লাভের জন্য, ইসলাম ধর্মে আধ্যাত্মিক সাধনার কথা বলা হয়েছে। ধর্মের সাধকরাই মহাস্রষ্টার সান্নিধ্য লাভে সচেষ্ট হয়েছে। মহান স্রষ্টার সান্নিধ্য লাভের এই শিক্ষাই বিশ্বজাকের ইজতেমার মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব।
হে মানব সম্প্রদায়! রসুলুল্লাহ (সঃ)-এর সত্য তরিকা, আহলে বাইয়াত ও পাকপাঞ্জাতনের ধারা জিন্দা ও তাজা করার লক্ষ্যে জানে-মালে খেদমতে এগিয়ে আসুন।