প্রকাশনা প্রসঙ্গে
একুশ শতকের আধ্যাত্মিক মহাসাধক শাহসূফী আলহাজ মাওলানা হযরত সৈয়দ জাকির শাহ নকশবন্দি মোজাদ্দেদি কুতুববাগী কেবলাজানের মহামূল্যবান নসিহত সংবলিত এই গ্রন্থ, যা বহু বছর ধরে কুতুববাগী কেবলাজান তাঁর লাখ লাখ ভক্ত-আশেক-জাকের-মুরিদের উদ্দেশে বিভিন্ন সময়ে নসিহতবাণী রূপে পেশ করে আসছেন। কেবলাজানের সমীপে ভক্ত-জাকের, মুরিদরা অনেকদিন ধরেই আর্জি জানিয়ে আসছিলেন যে, কোরআনহাদিস-ইজমা ও কিয়াসের আলোকে প্রদত্ত এসব বাণী গ্রন্থ আকারে প্রকাশের। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের এপ্রিল মাস থেকে জাতীয় দৈনিক পত্রিকাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এসব গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধ রচনা করে তা প্রকাশ করতে শুরু করেন তিনি। সেসব নিবন্ধেরই সংকলিত রূপ এই গ্রন্থ। গ্রন্থিত এই লেখাগুলোর তাৎপর্য অপরিসীম। কেননা কোরআন-হাদিসের নির্যাস ছেঁকে এনেছেন খাজাবাবা কুতুববাগী তাঁর প্রতিটি নিবন্ধে। কালিমা, নামাজ, রোজা, হজ ও যাকাতসহ ইসলামের শরিয়ত, তরিকত, হাকিকত ও মারেফত সংবলিত কর্মকান্ডের অনিবার্যতা যেমন এসব লেখায় সহি দলিলসহ উপস্থাপন করা হয়েছে, তেমনই ইসলামী জীবন বিধানের বহু অনুষঙ্গ খাজাবাবা কুতুববাগী কেবলাজানের শ্রম, নিষ্ঠা আর নিরলস সাধনা ও গবেষণার ফসল এ গ্রন্থে অত্যন্ত সহজ ভাষায় বিশ্লেষণ করেছেন। অনেকেই পীর-মাশায়েখদের নামে নানা বিতর্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা করেন, এমন প্রশ্নও করেন যে, ‘পীর’ কোরআনে আছে কি’? না, কোরআনে এ শব্দ থাকার কথা নয়। পীর হল ফার্সী শব্দ। কোরআনের ভাষায় পীরকে বলা হয় ‘মোর্শেদ’। পবিত্র কোরআনের বিভিনড়ব আয়াতে ‘অলি’ এবং ‘মোর্শেদ’ কথাটি রয়েছে। সাধারণ মানুষের অজানা এমন অসংখ্য বিষয় খাজাবাবা কুতুববাগী কেবলাজান এই গ্রন্থের বিভিন্ন নিবন্ধে দলিলসহকারে তুলে ধরেছেন। এসব লেখার মধ্য দিয়ে পীর বা মোর্শেদের কাছে যাওয়া এবং বাইয়াতের কথা পবিত্র কোরআন ও হাদিসে কীভাবে বলা হয়েছে, তার উল্লেখ আছে। মারেফাত কী? পরিপূর্ণ ইসলমের সঙ্গে মারেফতের সম্পর্ক কী? পীরকে বাবা বলা হয় কেন? রাসুল (সঃ)-এর শানে মিলাদ-কিয়াম করা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে যেসব অনর্থক বিতর্ক সমাজে চলছে, পবিত্র কোরআন-হাদিসের নির্ভুল দলিল দিয়ে মোর্শেদকেবলা তারও সমাধান দিয়েছেন। আশা করি এ গ্রন্থ অসংখ্যা আশেকান-জাকেরান ভক্ত-মুরিদানদের জন্য এ এক অমূল্য রত্ন ভান্ডার। দেশের সাধারণ মানুষ থেকে সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের মধ্যেও চিন্তার নতুন আলো ছড়াবে এ গ্রন্থ! ধর্ম ও প্রগতির মধ্যে কোনো বিরোধ যে নেই, সে সত্যও স্পষ্ট হবে। সূফীবাদের উদার মানবিক মূল্যবোধ বিস্তৃত হলে সমাজ থেকে সংকীর্ণতা ও সহিংসতা দূর হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। শত চেষ্টা করেও কিছু শব্দের বানান এবং মুদ্রণ ত্রুটি এড়ানো গেল না। সচেতন পাঠক অনুগ্রহ করে লিখে জানালে পরবর্তী সংস্করণে সংশোধন করা হবে। -প্রকাশক