আলহাজ মাওলানা হযরত সৈয়দ জাকির শাহ্ নকশবন্দি মোজাদ্দেদি কুতুববাগী
ওরছ শরীফের গেট প্যান্ডেল ও আলোকসজ্জা করার বৈধতার বিষয়ে আল্লামা ইসমাইল হাক্কী (রহ.) তাঁহার রচিত বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ তাফসীরে রুহুল বায়ানের ১ম খন্ড ৮৭৯ পৃষ্ঠায় ১০ম পারা, সূরা তওবা, আয়াত নং-১৮ তে, ‘ইন্নামা ইয়া’মুরু মাসা-জ্বিদাল্লাহি মান্ আ-মানা বিল্লা-হি ওয়াল ইয়াওমিল্ আ-খিরি ওয়া আক্বা-মাস্বা-তা ওয়া আ-তায্যাকা-তা ওয়া লাম্ ইয়াখ্ শা ইল্লাল্লা-হা ফা’আসা উলা-য়িকা আই ইয়াকুনূ মিনাল সুহতাদীন’। আয়াতটির ব্যাখ্যায় নিম্নোক্ত হাদিস শরীফের উল্লেখপূর্বক লেখেন ‘ফা-লামা কাদিমা তামিমুদ দারিউল মাদিনাতা সাহিবাতুহু কানাদিলু ওয়া হিবালা ওয়া জাইতান ওয়ালা-কা তিলকান কানাদিলা বে-ছেয়ারিউল মাসজিদি ওয়া উকিজ-দাদতু ফা-ক্বালা স. না ওয়ারতা মসজিতানা নাওয়ারাল্লাহু আলাইকা আমা-ওয়াল্লাহি লাওকানা লি-বিনতা লা-আনকাহ্ তুহা হায়া’।অর্থ: একদা হযরত তামীমুদ্দারী (র:) বহু ঝারবাতি, রশি ও জয়তুনের তৈল সঙ্গে নিয়া মদীনা শরীফে আসেন এবং মসজিদে নববীর দেয়ালে বাতিগুলি রশিতে বাধিয়া ঝুলাইয়া দেন এবং বাতিগুলিতে তেল ঢালিয়া সেইগুলিতে অগ্নি সংযোগ করেন। এতদ্বর্শনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁহাকে বলেন, তুমি আমাদের মসজিদ আলোকিত করিয়াছ আল্লাহপাক তোমাকে আলোকিত করিবেন। অতঃপর রসুল (সঃ) উপস্থিত সকলকে সাক্ষি করিয়া বলেন, আল্লাহর কসম! আমার যদি একটি কন্যা থাকিত তবে তাহাকে আমি তাহার সঙ্গে শাদী দিতাম। তাফসীরে রুহুল বায়ানের ১ম খন্ড ৮৭৯ পৃষ্ঠায়, এই একই পর্বের আলোচনায় অতঃপর আল্লামা মুসান্নেফ (র:) মাযার শরীফে মোমবাতি জ্বালানো এবং আলোকসজ্জা করার স্বপক্ষের দলিল হিসাবে আল্লামা শামীর, ওস্তাদ হযরত আল্লামা শেখ আব্দুল গনি বাবলুসী রহমাতুল্লাহ আলাইহের ‘কাশফুন নূর আন আসহাবিল কুবুর’ গ্রন্থে লিখিত ফতোয়ার উল্লেখপূর্বক লেখেন: ‘আল্লামা শেখ আব্দুল গনি বাবলুসী (র:) তাঁহার কিতাব, ‘কাশফুন নূর আন আছহাবিল কুবুর’ গ্রন্থে যাহা লিখিয়াছেন তাহার সারকথা হল এই, যখন ‘বিদয়াতে হাসানা’ শরিয়তের কোন উদ্দেশ্য হাসিলের উদ্দেশ্যে হয় তখন তাহা সুন্নত। অতএব উলামা, আউলিয়া ও সালেহীনদের গম্বুজ তৈরী করা এবং চাদর বা গিলাফ দিয়া সাজানো বা গের্দা বালিশ দিয়া সাজানো ইত্যাদি জায়েয।
কোরআন, হাদিস, ইজমা ও কিয়াস দ্বারা পর্যালোচনা করে দেখা গেল, ওরছ শরীফ জামে আম্বিয়া, জামে আউলিয়াদের মহাপবিত্র মজলিশ, কাজেই এই মজলিশকে রওশন করা, সৌন্দর্য্য বা ইসলামের ভাব-গাম্ভির্যতা বৃদ্ধি করতে যাইয়া, ওরছ শরীফের গেট প্যান্ডেল আলোকসজ্জা করা ফুল দিয়া সাজানো, খানা-পিনা করা, আতর গোলাপ ছিটানো ইত্যাদি খুবই উত্তম কাজ। এটা মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে অতি পছন্দনীয়। যে সমস্ত আম মানুষেরা সমালোচনা করিয়া বেড়ান, কুতুববাগ দরবার শরীফের ওরছ ও বিশ্বজাকের ইজতেমায় টাকা-পয়সা ব্যয় ব্যহুদা। অথচ আল্লাহতায়ালা সূরা ইমরানের ৯২ নং আয়াতে বলেন, ‘লান তানা লুল বিররা হাত্তা তুনফিকু নিম্মা তুহিব্বুন ওয়ামা তুনফিকু মিন শাইইন ফাইন্নাল্লা-হা বিহী আলীম’। অর্থ: তোমরা যাহা ভালোবাস তাহা হইতে ব্যয় না করা পর্যন্ত, তোমরা কখনও পূণ্যলাভ করিবে না। তোমরা যাহা কিছু ব্যয় কর, আল্লাহ অবশ্যই সে সর্ম্পকে সবকিছু জানেন’।