সত্যকে জানার জন্য আউলিয়াকেরাম ও মুনিঋষিদের সান্নিধ্য লাভ

আলহাজ মাওলানা হযরত সৈয়দ জাকির শাহ্ নকশবন্দি মোজাদ্দেদি কুতুববাগী

সত্যকে জানার জন্য ইমাম গাজ্জালী (রঃ) ছিলেন যুগশ্রেষ্ঠ দার্শনিক, বিশ্ববিখ্যাত দর্শনশাস্ত্র ‘কিমিয়ায় সাদাত’, ‘মিনহাজুল আবেদীন’, ‘এহিয়াউ উলুমুদ্দীন’সহ অন্যান্য অনেক বিখ্যাত গ্রন্থের লেখক। কিন্তু এত বিদ্বান হওয়া সত্ত্বেও তিনি সার্বিক সমস্যা সমাধানে বৈষয়িক শিক্ষা যথেষ্ট মনে করলেন না। আধ্যাত্মিক বা আত্মিক শিক্ষার অভাব বোধ করলেন। একদিন কেঁদে কেঁদে মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করলেন, কোন পথে আমার শান্তি? কোন পথে সার্বিক মুক্তি? হে প্রভু, আমাকে বলে দাও। স্বপ্নযোগে দয়াল নবীজী বললেন, ‘হে গাজ্জালী, সূফীবাদই তোমার জন্য উত্তম রাস্তা।’ ইমাম গাজ্জালী (রঃ) চিন্তায় পড়ে গেলেন, কোন গুরুকে ধরলে আত্মদর্শন এবং প্রভুদর্শন লাভ হবে এবং আত্মতৃপ্তি লাভ করা যাবে। ইবলিশ শয়তানের ধোঁকা বা ওয়াছ-ওয়াছা মুক্ত হয়ে ইনসানে কামেল হওয়া যাবে। স্থির করলেন, আবু আলী ফারমুদিই আমার জন্য আত্মরাজ্যের মহাগুরু বা কামেল মোর্শেদ। তাই তিনি চলে গেলেন পীরের দরবারে। অথচ ফারমুদি তুসী ছিলেন নিরক্ষর, লিখতে পারতেন না। এই নিরক্ষর পীরের সোহবতে এসে তাঁর খেদমত করিয়া অল্পদিনেই গাজ্জালী (রঃ) সাধনায় সিদ্ধি এবং মহান আল্লাহতায়ালার নৈকট্য লাভ করিলেন। পাইলেন তৃপ্তি আর অফুরন্ত নিয়ামত। যা তিনি তরিকতে বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করার পূর্বে হাসিল করতে পারেন নাই। বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী বাগদাদী (রঃ) বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছেন, শায়খ আবু সাঈদ মাখজুমী (রঃ)-এর কাছে।

সত্যকে জানার জন্য হযরত খাজা গরিবে নেওয়াজ মঈনুদ্দীন চিশতি হাসান সাঞ্জারী (রঃ) বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছেন, খাজা ওসমান হারুনীর কাছে।
সত্যকে জানার জন্য হযরত খাজা বাহাউদ্দীন নকশবন্দী বুখারী (রঃ) বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছেন, হযরত শাহ আমির সৈয়দ কালাল (রঃ)-এর কাছে।
সত্যকে জানার জন্য ইমামে রাব্বানী কাউমে জামানী গাউসে ছামদানী হযরত শায়েখ আহম্মেদ শেরহিন্দী মোজাদ্দিদ আল-ফেসানি (রঃ) বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন, হযরত খাজা মুহাম্মদ বাকি বিল্লাহ (কুঃ ছিঃ আঃ)-এর কাছে।
সত্যকে জানার জন্য বিশ্ববিখ্যাত দার্শনিক মাওলানা জালাল উদ্দীন রুমী বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন, শামসেত তাবরেজি (রঃ)-এর কাছে।
সত্যকে জানার জন্য বিশ্ববিখ্যাত ‘তাফসিরে কবির’-এর লেখক ইমাম ফখরুদ্দীন রাজি বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন, হযরত নাজিমুদ্দীন কোবরার কাছে।
সত্যকে জানার জন্য ইমামে আজম আবু হানিফা (রঃ) বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন, হযরত বাকের (রঃ)-এর কাছে।
সত্যকে জানার জন্য হযরত হাসান বসরী বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন, সৈয়দ ইমাম হাসান (রাঃ)-এর কাছে।
সত্যকে জানার জন্য গুরু নানক বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন, বাবা বাহালুল দানার কাছে।
সত্যকে জানার জন্য সুধীর চক্রবর্তী ‘লালন’ বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন, বাবা সিরাজ শাহ্-এর কাছে।
সত্যকে জানার জন্য লোকনাথ ভট্টচারী বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন, আবদুল গফুর শাহ-এর কাছে।
সত্যকে জানার জন্য হযরত শাহ ফতেহ আলী ওয়ায়েসী রাসুলে নোমা (রঃ) বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন, নূর মোহাম্মদ নিজামপুরীর (রঃ)-এর কাছে।
সত্যকে জানার জানার জন্য শাহ ওয়াজেদ আলী মেহেদীবাগী (রঃ) বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন, শাহ ফতেহ আলী ওয়ায়েসী রাসুলে নোমার (রঃ)-এর কাছে। সত্যকে জানার জন্য খাজাবাবা ইউনুস আলী এনায়েতপুরী বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন হযরত সৈয়দ ওয়াজেদ আলী শাহ্ মেহেদীবাগী (রঃ)-এর কাছে। সত্যকে জানার জন্য সৈয়দ আবুল ফজল সুলতান আহম্মেদ চন্দ্রপুরী (রঃ) বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন খাজাবাবা ইউনুস আলী এনায়েতপুরী (রঃ)-এর কাছে।
সত্যকে জানার জন্য মোফাসসিরে কোরআন শাহসূফী হযরত মাওলানা কুতুবুদ্দীন আহম্মেদ খান মাতুয়াইলী (রঃ) বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন, হযরত খাজা সৈয়দ আবুল ফজল সুলতান আহম্মেদ চন্দ্রপুরীর (রঃ)-এর কাছে।
সত্যকে জানার জন্য আমি অধম মোহাম্মদ জাকির হন্যেহারা হয়ে কামেল মোর্শেদের সান্নিধ্য পাইবার আশায়, খুঁজতে খুঁজতে ভাগ্যগুণে কামেল মোর্শেদ আমার আকা, আমার মাওলা, আমার মাশুক, আমার আত্মরাজ্যের মহাগুরু, বিশ্ববরেণ্য মহাত্মা, বিশ্ববরেণ্য মোফাসসিরে কোরআন, মোহাদ্দিসে আকবর, শামছুল আরেফিন, কাছরে আরেফিন, মহিউসসুন্নাহ, মহিউলকলব, আলহাজ মাওলানা মোর্শেদেনা খাজাবাবা শাহসূফী কুতুবুদ্দীন আহম্মেদ খান মাতুয়াইলী (রঃ)-এর কাছে, আল্লাহর রাস্তায় আত্মসমর্পন করে বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করি।

(Visited 1,234 times, 1 visits today)
Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *