মহানবী (সঃ) বলেন আমি আদম (আঃ) কে সৃষ্টির পাঁচশ চার কোটি বছর আগে আল্লাহতায়ালার কাছে নূরে মোহাম্মদী রূপে বিদ্যমান ছিলাম

(পবিত্র মক্কানগরীর হেরাগুহার (জাবালে নূর) এই স্থানে বসে আখেরী নবী (সঃ) সুদীর্ঘ ১৫ বছর ধ্যান ও মোরাকাবা করেছিলেন। সেখানেই খাজাবাবা কুতুববাগী কেবলাজান হুজুর মোরাকাবা-ধ্যানরত অবস্থায় আছেন, ছবিটি ২০১২ সালে পবিত্র ওমরাহ পালনের শেষে তোলা)

আলহাজ মাওলানা হযরত সৈয়দ জাকির শাহ্ নকশবন্দি মোজাদ্দেদি কুতুববাগী

‘কুনতু নূরান বাইনা ইয়াদাই রাব্বি ক্ববলা খালকি আদামা বিআর বায়াতি আশারা আলফা’ (রওয়াহু মুসলিম)।

‘আমি আদম (আঃ) সৃষ্টির চৌদ্দ হাজার বছর পূর্বে আল্লাহর কাছে নূর হিসাবে বিদ্যমান ছিলাম। ঐ জগতের একদিন পৃথিবীর এক হাজার বছরের সমান। অর্থাৎ পাঁচ‘শ চার কোটি বছর’ (হযরত আলি আলাইহিসালাম থেকে বর্নিত হাদিস : বেদায়া নেহায়া ও আনওয়ারে মুহাম্মদী )

নবী করীম (স.) জিব্রাঈল আলাইহিস সাল্লামকে তাঁর বয়স সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন, তিনি বলেন যে, চতুর্থ আকাশে একটি উজ্জ্বল তারকারাজি সত্তর হাজার বছর উদিত অবস্থায় এবং সত্তর হাজার বছর অস্তমিত বা নিভন্ত অবস্থায় বিরাজমান থাকত। আমি ঐ তারকারাজিটিকে বাহাত্তর হাজার বার উদয় হতে দেখেছি। নবী করিম (সঃ) বলেছেন, জিব্রাঈল! মহান আল্লাহতায়ালার শপথ, আমিই ছিলাম ঐ তারকা’ (মুসলিম শরীফ)। কুনতু নবীয়্যান আদামু বায়ন্যাল মা ওয়াত্বীন’ (রাওয়াহু মুসলিম )। অর্থ : নবীজি (সঃ) বলেন, আমি তখনও নবী ছিলাম যখন আদম (আঃ) পানি এবং মাটির মধ্যে মিশ্রিত ছিল’ (হাদীছে কুদ্সী, মুসলিম শরীফ)।

‘কুল ইন কুনতুম তুহিব্বুনাল্লা হা ফাত্তাবিউ-নী ইয়ুহুব্বিকুমুল লা-হু ওয়া ইয়াগফির লাকুম যুনুবাকুম ওয়াল্লা-হু গাফুরুর রহীম’। অর্থ : প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম বলুন, তোমরা আমি আল্লাহতায়ালাকে পেতে চাইলে আমি নবী (সঃ)-কে ভালোবাস, আল্লাহতায়ালা তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং ক্ষমা করবেন তোমাদের গুনাহ্, আল্লাহ ক্ষমাকারী অতি দয়ালু’ (সূরা : আল ইমরান, পারা-৩ আয়াত : ৩১)।

‘কুল বিফাদ্বলিল্লাহি ওয়া বিরাহমাতিহি ফাবিযালিকা ফাল ইয়াফরাহু হুওয়া খাইরুম মিম্মা ইয়াজ্বমাউন’।
অর্থ : হে রাসুল (সঃ) আপনি মানবমন্ডলীকে বলে দিন, আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত ও করুণাপ্রাপ্ত হয়ে তারা যেন ঈদ উৎসব পালন করে। এ ঈদ তাদের জন্য সব কিছু থেকে উত্তম’। (সূরা : ইউনুছ, পারা- ১০ আয়াত- ৫৮)।

নিশ্চয়ই মহানবী (সঃ) মানুষের জন্য মহা নিয়ামত, রহমত, কল্যাণ ইত্যাদি। আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে হুজুর (সঃ)-এর চেয়ে বড় নেয়ামত ও রহমত আর কী হতে পারে। মহান আল্লাহতায়ালা উপরোক্ত আয়াতে হুজুর (সঃ)-এর জন্ম বা শুভ আগমনকে ঈদ উৎসব পালনেরই আদেশ দিয়েছেন। অতএব ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী পালন করা মানুষের জন্য ওয়াজিব।

‘ওমামাকা-না লিমু মিনিও ওয়ালা মুমিনাতিন ইযা-ক্বাদ্বাল্লাহু ওয়া রাসূলুহু আমরান আইঁ ইয়াকুনা লাহুমুল খিয়ারতু মিন আমরিহিম ওয়ামাই ইয়া স্বিল্লা-হা ওয়া রাসূলুহু ফাক্বাদ দ্বল্লা-দ্বলা-লামমুবীনা’। অর্থ : আল্লাহ ও রাসুল (সঃ)-এর আদেশ অমান্যকারীরা প্রকাশ্যভাবে পথভ্রষ্ট হবে বা গোমরা হবে’ (সূরা : আহযাব- পারা- ৩৩ আয়াত- ৩৬)।

নবী করিম (সঃ)-কে নিজেদের জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসতে না পারলে, তোমরা প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না’ (হাদিসে : মাদারেজুন নবুয়্যত)।

‘ওয়া-লাক্বাদ কাত্বনা ফিযযাবুরি মীম বা’দিয় যিক্রি আন্নাল আরদ্বা ইয়ারিছহা ইবা-দিয়াস্ব-স্ব-লীহুন’ (সূরা : আম্বিয়া, পারা- ২১ আয়াত- ১০৫)। অর্থ : প্রিয় হাবিব (সঃ) নিশ্চয়ই আমি আল্লাহ আপনার মহব্বতে আমার মাহাবুব বান্দাদেরকে পৃথিবীর স্বত্ত্বাধিকারী করে তা আমার লওহে মাহফুজে লিখে রেখেছি।

‘কূলা-লা আসআলুকুম আলাইহি আজ্বরান ইল্লাল মাওয়াদ্দাতা ফিল কূরবা’  অর্থ : হে আমার নবী সাল্লাল্লাহা আলাইহি সাল্লাম আপনি বলে দিন, রিসালাত পৌঁছিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে তোমাদের কাছে কিছুই চাই না, তোমরা শুধু আমার আহালে বাইয়াতকে ভালোবাস’ (সূরা : শূরা, পারা- ৪২ আয়াত-২৩)।

নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট আমার আহলে বাইয়াতের উদাহরণ হযরত নূহ আলাইহিস সালামের কিস্তির মত, যারা তাঁর কিস্তিতে উঠেছিল তাঁরাই নাযাত পেয়েছিল’ (তিরমিযি ও মুসলিম শরীফ)। সেই আহলে বাইয়াতের অন্তর্ভুক্ত চার সাহাবা-সহ অন্যান্য সাহাবা ও আসহাবে সুফ্ফা সেখান থেকে সূফীবাদ এসেছে।

(Visited 3,514 times, 1 visits today)
Share