দরবার শরীফের মাধুর্য

খালেদ ফারুকী

কুতুববাগ দরবার শরীফের বৈশিষ্ট স্পষ্টতই অন্য যে কোনো দরবার থেকে আলাদা। এই দরবার শরীফের প্রধান বৈশিষ্ট হলো শরীয়তের প্রতি একনিষ্ঠ আনুগত্য, যা মানব জীবন গঠনে অনন্য নির্দেশনা দিয়ে থাকে। কুতুববাগ দরবার শরীফের প্রধান আকর্ষণ খাজাবাবা সৈয়দ হযরত জাকির শাহ। তাঁর সান্নিধ্যে একবার এলে তাঁর গুণাবলির প্রতি আকৃষ্ট না হয়ে পারবে না কেউই। এই দরবারের প্রধান বৈশিষ্ট মূলত অনুসৃত হয়েছে খাজাবাবা কুতুববাগীর নির্দেশিত পন্থায়। তিনি যেভাবে এই নির্দেশনা দিয়েছেন, সেই নির্দেশনায় প্রস্ফূটিত হয়েছে এই দরবার শরীফের মাধুর্য।

শরিয়ত অনুসরণের পাশাপাশি তরিকত, হাকিকত এবং মারেফাতের শিক্ষাই যে পরিপূর্ণ ইসলাম, এই সত্যের শিক্ষাই এ দরবার থেকে খাজাবাবা কুতুববাগী দিয়ে থাকেন। জীবন-যৌবন, আধ্যাত্মিক শান্তি এবং ইহকাল-পরকালের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছানোর শিক্ষা পাওয়া যায় কুতুববাগ দরবার শরীফে।‘সুফিবাদই শান্তির পথ’, এই মানবতাবাদী শিক্ষার মাধ্যমে জীবনের প্রশান্তি প্রাপ্তির মাহেন্দ্রক্ষণে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়ে থাকেন খাজাবাবা কুতুববাগী। কীভাবে ধীরে ধীরে নানা পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে ইহকাল পরকালের পূর্ণতার কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে যাওয়া যায় তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও নির্দেশনা দিয়ে থাকেন বাবাজান। প্রশান্তির ইন্দ্রজালে আবদ্ধ হওয়া যে কারো কাছে প্রাথমিকভাবে কঠিন মনে হলেও, খাজাবাবার সান্নিধ্যে এলে তাঁকে অত্যন্ত সহজতর মনে হবে। জীবনের যে কোনো স্তরে সাফল্য অর্জনের জন্য এই শিক্ষা একান্ত আবশ্যক। এই শিক্ষাপ্রাপ্তি এক সময় মানুষকে প্রশান্তির অনন্য ধারায় সিক্ত করে, ঘৃণা-বিদ্বেষ, পরনিন্দা ও আত্ম-অহমিকার মতো নিন্দনীয় বৈশিষ্টগুলো জীবন থেকে ঝেড়ে ফেলে শুদ্ধ, বিনয়ী ও মানবপ্রেমী শিক্ষাই দেয় সুফিবাদ তথা এই দরবার শরীফ।

ফার্মগেটে কুতুববাগ দরবার শরীফে ঢুকলেই যে কারো মনের সংশয় দূর হবে যে, এটি আর দশটি দরবার শরীফ থেকে ভিন্নতর। এখানে সর্বত্রই নজরে পড়বে শরিয়ত অনুসরণ সম্পর্কে অবশ্য করণীয় বাণীগুলো। খাজাবাবা কুতুববাগীর নির্দেশনা সর্বত্র এই যে, শরিয়ত অনুসরণ অবশ্য কর্তব্য। শরিয়তের ছোটখাটো সব নিয়ম অনুসরণের মধ্য দিয়েই মারেফতের গভীর তত্ত্ব হাসিলের পথ সহজ হয়ে যায়। ব্যাপারটা এই রকম যে, আগে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। আমরা যারা সাফল্যের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করতে পেরেছি, পরবর্তী সময়ে তারা এগিয়ে গেছেন উচ্চ শিক্ষার পথে। আর যাদের প্রাথমিক শিক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়নি, হয় তারা ঝরে পড়েছেন, অথবা নানা সমস্যা নিয়ে মাধ্যমিক পথ পাড়ি দিয়েছেন নানান সঙ্কটের মধ্য দিয়ে। তার পরের স্তর উচ্চ মাধ্যমিক এবং স্নাতক পর্যায়ে তাদের যে কী অবস্থা হবে, তা সহজেই অনুমেয়, বা আদৌ উত্তীর্ণ হওয়া সম্ভব কি না, তা পাঠকমাত্র অনুধাবন করতে পারবেন।
ইহলৌকিক ও পরলৌকিক মঙ্গলপ্রাপ্তি আদৌ বিনা মাসুলে, তথা কর্ম-সাধন না করে অর্জন যে সম্ভব নয়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে এই অর্জনের জন্য রয়েছে নানা বাঁক, নানা পথ। সেই সঠিক পথটির সন্ধানই দিয়ে থাকেন খাজাবাবা কুতুববাগী, সরাসরি শরিয়ত অনুসরণের মাধ্যমে। প্রশান্তিময় সেই শান্তির জগত সকলেরই কাম্য। সেই কাক্সিক্ষত পথের সন্ধান জানতে আসুন কুতুববাগ দরবার শরীফে, আহরণ করুন সেই শক্তি ও সাহস, যা দিয়ে হবে ইহলৌকিক ও পরলৌকিক মঙ্গল।

লেখক : সাংবাদিক

(Visited 183 times, 1 visits today)
Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *