খাঁটি সোনা দূর থেকে পিতল মনে হতে পারে

সেহাঙ্গল বিপ্লব

সূফীবাদই শান্তির পথ’ -খাজাবাবা কুতুববাগী পীরকেবলাজান কর্তৃক প্রচারিত, ইলমে তাসাওফের অমূল্যবাণী মুদ্রিত পত্রিকা ‘আত্মার আলো’ নিয়মিত পাঠ করলে, স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে নিগূঢ় রহস্যের কিছুটা হলেও জানতে ও বুঝতে পারবেন। কেন প্রত্যেক মানুষকে একজন কামেলপীর-মুর্শিদের সান্নিধ্যে যেতে হবে? কেন কামেলপীরের হাতে বাইয়াত গ্রহণ করতে হবে? কামেল পীরের আদেশ-নিষেধ পালন করলে মুরিদের জন্য অবশ্যই মঙ্গলজনক হওয়ার প্রমাণ পাবেন। কামেলপীরের হাতে বাইয়াত ছাড়া মহান আল্লাহর দীদার বা দেখা কোন মানুষই সহজে পাবেন না, তাতে আপনি, আমি যত বড় জ্ঞানী-গুণী-প-িত, মুফতি-মাওলানা, মোহাদ্দেস-মোফাসসের, হাফেজ-কারী হই না কেন তাতে মহান আল্লাতায়ালার কিছু আসে যায়  না। তিনি অদ্বিতীয় মহা পরাক্রমশালী। তিনি পরম, আমি জীব, তিনি স্রষ্টা আমি  সৃষ্ট, তাঁর তুলনা তিনি নিজেই ভালো জানেন। যা হোক, কীভাবে নামাজ আদায় করলে নামাজে হুজুরি (একাগ্রতা) আসে? এবং কীভাবে মহান আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করা যায়? এমন অসংখ্য সত্য বিষয় জানা যাবে। আর তাই তো কোন এক সাধক-কবি বলেছেনÑ ‘সত্য বল সুপথে চল ওরে আমার মন…’। এই যে সত্য বলা কিংবা সুপথে চলার কথা বলেছেন, তা তো কখনো একা একা চলা বা বলা যায় না। যদিও যায়, কিন্তু তাতে কোন মজা বা স্বাদ থাকে না। বলতে গেলে যেমন শোনার জন্য কোন না কোন শ্রোতা লাগে, যিনি শুনে বলবেন, হ্যাঁ, তুমি সত্য কিংবা মিথ্যা বলেছ। আবার সুপথে চলার জন্যও কারো না কারো সাহায্যের দরকার হয় এবং তিনি দেখিয়ে দেন সুপথ বা সহজ-সরল পথের দিশা। এই শ্রোতা বা সুপথের সন্ধানদাতাকে খাঁটি বাংলায় বলা হয় ‘গুরু’ প্রথপ্রদর্শক। আর তিনি হবেন কামেল-মানুষ। যেহেতু সত্য পথের সন্ধান সহজে পাওয়া যায় না, এর জন্য গুরুর সান্নিধ্যে সাধনার প্রয়োজন হয় এবং আপদে-বিপদে গুরুই কেবল রক্ষাকবজ। আর তাই তো সাধক-কবি আরোও বলেছেনÑ ‘সর্ব সাধন সিদ্ধ হয় তার, মানুষ গুরু নিষ্ঠা যার…’। মনেপ্রাণে যদি একজন কামেলপীর বা মানুষগুরুর প্রতি নিষ্ঠাবান হওয়া যায়, তবে দুনিয়া এবং আখেরাত নিয়ে বেশি চিন্তা করতে হয় না। কারণ, তখন আল্লাহতায়ালা নিজেই বান্দার জিম্মাদার হয়ে যান। আমরা সৃষ্টির সেরা জীব তাই মানুষ হিসেবে আমাদের রয়েছে নানারকম দায়িত্ব ও কর্তব্য যা অবশ্যই পালনীয়। বিশেষ করে অজানাকে জানা এবং জানার পরে সত্যকে মেনে চলার আদেশও আল্লাহতায়ালা করেছেন। কারণ বিচার দিনের হাকিম তিনি, আমাদের ন্যায়-অন্যায়ের জন্য বিচারের ব্যবস্থা রেখেছেন, পাপী-তাপী গুনাহ্গারের জন্য যেমন কঠিন এবং পুণ্যবানদের জন্য অতি সহজ হবে সেই বিচার। মহান আল্লাহ নিজে যেমন কোন দোষ করেন না, তেমনই কাউকে দোষী হতেও উৎসাহ প্রদান করেন না। দুনিয়া এবং আখেরাতে কেবল তিনিই হবেন হক বিচারক। যেহেতু আমাদের মধ্যে বিভিন্ন রিপু আছে, তাই প্রতিনিয়ত খেয়ালে কিংবা বেখেয়ালে কোন না কোনভাবে ছোট-বড় গুনাহ্ হয়েই থাকে। একমাত্র কামেলপীর-মুর্শিদই পারেন এ সব গুনাহ্ থেকে আল্লাহতায়ালার দরবারে ক্ষমা পাওয়ার সহজ রাস্তা দেখাতে এবং পরবর্তীতে বেগুনাহ্ থাকার নিয়ম শিখাতে। এ শিক্ষা কোন মাদ্রাসা-স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখা যায় না। এ মহাজ্ঞানের জ্ঞানী হলেন তাসাওফপন্থি কামেলপীর বা আধ্যাত্মিক শিক্ষাগুরু। তিনিই পারেন একজন সাধারণ মানুষকে অসাধারণ মানুষে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে। আমাদের পীরকেবলাজান খাজাবাবা কুতুববাগীও এ জামানার একজন মোজাদ্দেদ ও পীরেকামেল-মুর্শিদে মোকাম্মেল। এ কথা খুব সহজেই বিশ্বাস করবেন যারা তাঁর সহবতে এসেছেন। দূরে থেকে খাঁটি সোনাও তামা-কাসা বা পিতল মনে হতে পারে, কিন্তু কাছে গেলেই বোঝা যায় আসল না কি নকল?

পৃথিবীর কোর্ট-কাচারিতে ভূমি সংক্রান্ত মামলাই বোধ হয় সব চেয়ে দীর্ঘ মেয়াদি হয়। এ মামলার ফাইল নানাকারণে বছরের পর বছর ঝুলে থাকে। এমনও দেখা যায় কোন কোন মামলা নিষ্পত্তির আংশকা একজীবনেও থাকে না! তখন বাদী কিংবা আসামীর এ অবস্থাতেই মৃত্যুবরণ করতে হয়। সে মামলার দায়ভার এসে পড়ে ওয়ারিশ কিংবা দাবিকারীর ওপর, বিচারপতিও এমন সমস্যা জর্জরিত মামলার নথি  সহজে উল্টিয়ে দেখতে চান না। তেমনই আমাদের এই যে দেহতরী, এটাও মাটির তৈরি আর এ মাটি নিয়ে যদি কোন মামলা মহান আল্লাহর বিচারিক আদালতে নথিভুক্ত হয়, তবে তা থেকে আর সহজে মুক্তি নেই। আল্লাহতায়ালা বিচারের দিন কাহার ‘নির্দয়’ সাজবেন। এখানের মামলা এখানেই শেষ না করে গেলে পরকালে শেষ হবার সম্ভাবনা খুবই কম, তখন যদি মহান আল্লাহর মনোনীত প্রত্যক্ষ একজন উকিল (উছিলাকারী পীর-মুর্শিদ) বা সাক্ষিদাতা থাকেন তো নসিব অতি ভালো। তা না হলে বিচারের অপেক্ষায় অনন্তকাল থাকতে হবে দুঃখ-তাপের হাজতে। দুনিয়ার আদালতেও এমন মামলার প্রমাণ ভুরি ভুরি দেখা যায় যে, কত মানুষ বিনা বিচারেই বছরের পর বছর হাজতবাসী হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। আবার কেউ ফেরারী, ধরা পড়লেই জেল-জরিমানা ছাড়াও কতরকম মুসিবত তা আর লিখে প্রকাশ করা গেল না। মাসিক ‘আত্মার আলো’ পড়লে পবিত্র কোরআন-হাদিসের সত্যালোকে লেখা এ রকম অসংখ্য অজানাকে জানতে ও বুঝতে পারবেন। মহান আল্লাহতায়ালা নারী ও পুরুষ সবাইকে পবিত্র কোরআন ও হাদিসের নির্দেশ মতো কামেলপীর কাছে বাইয়াত নেয়া এবং তাঁর দেখানো পথ মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

(Visited 276 times, 1 visits today)
Share