কুতুববাগ দরবার শরীফে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সঃ) পালিত

মাওলানা জাকির হোসেন আজাদী

 

পবিত্র মিলাদুন্নবী সম্পর্কে আল্লাহপাক বলেন, ‘কুল বি ফাদলিল্লাহি আবিরাহমাতিহী ফা-বিজালিকা ফাল ইয়াফরাহু হুয়া খায়রুম মিম্মা ইয়াজমাউন।’ অর্থাৎ, বলুন, হে রাসুল (সঃ) এটা আল্লাহর দান ও দয়া, সুতারাং এতে তাদের খুশি হওয়া উচিত। তারা যা জমা করেছে তার চেয়ে এটা অধিক উত্তম। (সুরা : ইউনুস, আয়াত ৫৮)

গত ১৩ ডিসেম্বর রোজ মঙ্গলবার কুতুববাগ দরবার শরীফে অত্যান্ত ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সঃ) বহু ভক্ত-আশেক-জাকেরদের উপস্থিতিতে পালিত হয়। রাসুল (সঃ)এর শানে মিলাদ-কিয়ামের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে দরবার শরীফের মোজাদ্দেদিয়া মিশনের আলেমগণ রাসুল (সঃ)এর পবিত্র জীবনবৃত্তান্ত ও জন্মোৎসবের ওপর জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করেন। অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিগণও আলোচনায় অংশ নেন। সবশেষে কতুববাগ দরবার শরীফের পীর ও মুর্শিদ খাজাবাবা শাহসূফী আলহাজ মাওলানা হযরত সৈয়দ জাকির শাহ নকশবন্দি মোজাদ্দেদি কুতুববাগী কেবলাজান পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সঃ)এর গুরুত্ব-মহত্ত ও রাসুল (সঃ)এর জীবনাদর্শের ওপর দিক-নিদের্শনামূলক আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘হযরত মুহাম্মদ (সঃ) ৫৭০ খৃষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল মক্কার কুরাইশ বংশে মা আমেনার পবিত্র কোল আলোকিত করে আবির্ভূত হন। তাঁর আগমন না হলে পৃথিবীই সৃষ্টি হত না। সুতরাং ঈদে মিলাদুন্নবী (সঃ) হলো সকল ঈদের শ্রেষ্ঠ ঈদ বা আনন্দ। তাঁর আগমনে সমস্ত সৃষ্টি জগৎ খুশিতে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে। কাফের মুশরিকগণ ভয়ে প্রকম্পিত হয়ে পড়েন। বিশেষ করে সিরিয়ার প্রাসাদগুলো খসে পড়ে, অগ্নি পূজারীদের আগুন নিভে যায়। কেননা, রাসুল (সঃ) এসেছিলেন বিশ^জাহানের রহমত স্বরূপ। বাল্যকালেই তিনি আল আমিন, আস সাদিক উপাধিলাভ করেন। তাঁর যশ-খ্যাতি সমগ্র মক্কায় ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু চল্লিশ বছর বয়সে নবুওয়াত পাওয়ার পর তাওহিদের দাওয়াত দেয়ার কারণে, নিজ কওমের মানুষের হাতে তিনি নির্যাতিত হন। অবশেষে মহান আল্লাহর নির্দেশে মদিনায় হিজরত করেন। সেখানে তিনি একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। অনেকগুলো যুদ্ধ-বিগ্রহ করতে হয়। সবশেষে মক্কা বিজয় হয় এবং তাঁর মাধ্যমেই আমরা পেয়েছি কলেমা, নামাজ, রোজা, হজ ও যাকাত। বিদায় হজের ভাষণে আল্লাহতায়ালা ইসলামকে পূর্ণতা দিয়ে কোরআনে সর্বশেষ আয়াত অবতীর্ণ করেন। যেখানে বলা হয়েছে, ‘আজকের দিনে আমি ইসলামকে পূর্ণাঙ্গতা দান করলাম’। এরপর ৬৩২ খৃষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল তিনি পর্দা করেন। এই মিলাদুন্নবী (সঃ)এর দিনে আমার সকল ভক্ত-মুরিদ ও আশেকান-জাকেরানসহ সকলেদের প্রতি নির্দেশ রইলো, আপনারা আমৃত্যু রাসুল (সঃ)এর আদর্শের পথে নিজের জীবনকে পরিচালিত করবেন। সবশেষে দোয়া-মোনাজাত ও তাবারক বিতরণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

লেখক : সাংবাদিক ও খাদেম, কুতুববাগ দরবার শরীফ

(Visited 260 times, 1 visits today)
Share

1 Comment

  1. Mahm

    কিন্তু মহানবী (সঃ) এর সময় থেকে শুরু করে তাবে তাবেইন পর্যন্ত কেউতো ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করেননি।
    নিচের লিংকটি দেখার অনুরোধ রইলো।
    http://taalpaata.blogspot.com/2018/03/blog-post_999.html?m=1

    Reply

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *