নাসির আহমেদ আল মোজাদ্দেদি
কুতুববাগ দরবার শরীফের পীর-মুর্শিদ খাজাবাবা শাহসূফী আলহাজ মাওলানা হযরত সৈয়দ জাকির শাহ নকশবন্দি মোজাদ্দেদি কুতুববাগী কেবলাজানের আশেক জাকের জাকেরীন সংখ্যা লক্ষ লক্ষ। তাদর মধ্যে অনেকে জানলেও সবাই জানেন না আমাদের প্রিয় দরবার শরীফের নামের আগে কেন ‘কুতুব’ এবং ‘বাগ’ শব্দ দুটি যুক্ত করা হয়েছে। যারা দরবারে নিয়ামত আসেন তারা খাজাবাবার ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য লাভ করেছেন, বিভিন্ন সময়ে আলাপ আলোচনায় এ তথ্য জানতে পেরেছেন যে, মুর্শিদ কেবলার পরমগুরু যিনি আমাদের দরদী দাদাপীর শাহসূফী হযরত মাওলানা কুতুবুদ্দিন আহম্মদ খান মাতুয়াইলী (রঃ)-এর নামানুসারে তাঁর নামের প্রথামাংশ নিয়ে আমাদের দরবার শরীফের নামকরণ করা হয়েছে ‘কুতুববাগ দরবার শরীফ’ অর্থাৎ এক অর্থে আমাদের মুর্শিদকেবলা মহব্বতে তাঁর আপনপীরের নামটিকে দরবারের সঙ্গে চিরকালের জন্য সংযুক্ত করেছেন। এছাড়াও অন্য অর্থে কুতুব তথা বুর্জুগানে দ্বীন ও আল্লাহতায়ালার মহান বন্ধু-অলিগণের বাগান হিসেবে এই দরবারের তাৎপর্য বোঝানো। কিন্তু দুঃখের বিষয় যারা এই দরবারের জাকের-মুরিদ নন, যাদের এখানে যাতায়াত নেই, তারা অনেকেই অন্য কোনো বাগের সঙ্গে কুতুববাগ দরবার শরীফের নামটি মিলিয়ে ফেলে বিভ্রান্তিতে পড়ে যান। তারা জানেন না যে ‘কুতুব’ শব্দটি যার নাম থেকে নেওয়া হয়েছে তিনি শুধু অধ্যাত্মিক জ্ঞানের মহা সমুদ্রই নন, শরিয়তী জ্ঞানের মহান প-িতও। তাঁর মত একজন বিশ্বখ্যাত কোরআন তাফসিরকারক বাংলদেশে বিরল প্রায়। আমাদের প্রাণপ্রিয় মুর্শিদকেবলা তাঁর দরদী মাশুকের সেই পবিত্র নামেরই একটি অংশ ‘কুতুব’ নিয়ে এই দরবার শরীফের নাম ‘কুতুব+বাগ= কুতুববাগ’ রেখেছেন। আর ‘বাগ’ শব্দের অর্থ বাগান বা বাগীচা, অর্থাৎ কুতুব এর বাগান।
রাজধানী ঢাকায় প্রাণকেন্দ্র ৩৪ ইন্দিরা রোড, ফার্মগেট-এ কুতুববাগ দরবার শরীফের সদর দপ্তর-এ আমাদের পীরকেবলাজান, যিনি দেশ ও দেশের বাহিরে অগণিত ভক্ত আশেক-জাকেরানদের উছিলাকারী এবং আলোকিত পথের সন্ধানদাতা, সেই শাহসূফী আলহাজ মাওলানা হযরত সৈয়দ জাকির শাহ নকশবন্দি মোজাদ্দেদি কুতুববাগী কেবলাজান হুজুর, হযরত কুতুবুদ্দিন আহম্মদ খান মাতুয়াইলী (রঃ)-এর একমাত্র খেলাফতপ্রাপ্ত খলিফা। এ প্রসঙ্গে খাজাবাবা কুতুববাগী কেবলাজানের নিবাস ও পরিচয় প্রসঙ্গে দু’একটি কথা বলা যেতে পারে। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার অর্ন্তগত বন্দর থানার কলাগাছিয়া ইউনিয়নে, শুভকরদি গ্রামে এক সম্ভ্রন্ত ধার্মিক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম মুন্সি খলিলুর রহমান ও মাতা মরহুম হালিমা খাতুন। কুতুববাগী কেবলাজানের পীর-মুর্শিদ বিশ্ববরেণ্য মোফাসসেরে কোরআন, মোহাদ্দেসে আকবর, মুফতিয়ে আজম, কাছরে আরেফিন, মহিউস সুন্না, মুহিউল কাল্ব, আলহাজ মাওলানা শাহসূফী কুতুবুদ্দিন আহম্মদ খান মাতুয়াইলী (রঃ)-এর নাম অনুসারে আমাদের দরবার শরীফের নাম রাখা হয়েছে ‘কুতুববাগ দরবার শরীফ’। নামকরণের নেপথ্যের এ বিষয়টি না জানার কারণে, অনেকেই ভুলবশত ধারণা করে থাকেন যে, অন্য কোনও ‘বাগ’এর সঙ্গে ‘কুতুববাগ’এর সম্পর্ক রয়েছে। তাদেরকে বিনীতভাবে বলছি, বাংলাদেশে অন্য কোন বাড়ি বা দরবারের নামের সঙ্গে যদি ‘বাগ’ যুক্ত থেকে থাকে, তবে সে সব ‘বাগ’এর সঙ্গে ঢাকার ফার্মগেটে অব¯ি’ত ‘কুতুববাগ দরবার শরীফ’এর কোন রকম সম্পর্ক নেই। এরপরও আপনাদের যদি কারো কোন কৌতুহল হয়, মেহেরবানি করে তাদেরকে একটু খোঁজ-খবর নিয়ে দেখার অনুরোধ করছি, তা হলেই আপনাদের সব দ্বিধা-দ্বন্দ কেটে যাবে। এ প্রসঙ্গে ছোট্ট একটা গল্প বলি, মনে করুন, কোন এক লোক আপনাকে বললো, অমুকের দশতলা বিল্ডিং ভেঙে পড়েছে, এ কথা শুনেই আপনি বিশ্বাস করলেন এবং ঘটনার উল্লেখিত স্থানে গিয়ে অবাক হলেন! দেখলেন, বিল্ডিং তো ভাঙে নাই। অক্ষত অবস্থায়ই আছে। আপনি ওই লোকের মুখের কথা শুনে বিশ্বাস করেছেন। কিন্তু নিজের চোখে দেখেননি, যখন নিজের চোখে দেখলেন, তখন বুঝতে পারলেন যে, ওই লোক মিথ্যে বলেছে। এরপর একদিন সেই ভুল তথ্যদানকারী লোকের সঙ্গে আপনার দেখা হলে, তাকে জিজ্ঞেস করলেন, সেদিন কেন মিথ্যে বলেছিলেন? উত্তরে সে বললো, আমিও অন্য একজনের কাছ থেকে শুনে আপনাকে বলেছিলাম, আমি নিজে দেখি নাই। তখন তাকে আর কী বলার থাকে, ‘শোনা কথায় কান দেয়া ভালো নয়। শোনা কথায় সবকিছু বিশ্বাস করতে হয় না। আসলে দূর থেকে কোন কিছুর ভালো-মন্দ বোঝা যায় না বা সঠিকভাবে জানাও যায় না।
আর যারা উদ্দেশ্যপ্রণদিত হয়ে কুতুববাগ দরবার শরীফের পীরকেবলাজানের এবং দরবারের সুনাম ক্ষুণœ করার চেষ্টা করছে। পরিপূর্ণ ইসলামের বিধিবিধান ও রাসুল করিম (সঃ) এর আদর্শের পথে মানবতার পথে চলার দিশারী যে দরবারÑ সেই ‘কুতুববাগ দরবার শরীফে’ এসেই একবার দেখে যান কোন মহান প্রতিষ্ঠান এই দরবার।