কুতুববাগী ক্বেবলাজান হুজুরের মহা মূল্যবান নসিহত বাণী

১. তোমরা প্রত্যেকেই নিজের নফসে আম্মারার সঙ্গে যুদ্ধ করো এবং তাকে বশ মানাতে চেষ্টা করো, তবেই আল্লাহতা’লা তোমাদের সফল করবেন।

২. পীরের খাসলতে খাসলত ধরো, তবেই ত্রাণ ও শান্তি।

৩. প্রত্যেক নিঃশ্বাসেই খেয়াল ক্বলবের ভিতর ডুবিয়ে রাখো, নইলে (পথভ্রষ্ট) হালাক হবার ভয় আছে। জীবনভর ইবাদত করে শেষ নিঃশ্বাসের সময় আল্লাহকে ভুলে মরলে সমস্ত ইবাদত বিনষ্ট হয়ে যাবে, বেঈমান হয়ে মরবে। তাই, আল্লাহর প্রিয় অলি-বান্দাগণ ইমানের সঙ্গে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করবার জন্য, মহান আল্লাহতা’লার হুজুরে জীবনভর কাঁদছেন। তোমরা ইমানের সঙ্গে মরার জন্য ক’দিন কেঁদেছো? মাতালের মত বেহুশ হয়ো না, হুশিয়ার হও! অমূল্য জীবন স্বপ্নের মত চলে যাচ্ছে, ফিরে আর পাবে না।

৪. যদি পরিপূর্ণ মুসলমান হতে চাও, তাহলে শরিয়তের ছোট বড় যাবতীয় হুকুম-আদেশ মেনে চল। তবেই মারেফতের জ্ঞান লাভ করা তোমাদের জন্য সহজ হবে।

৫. যারা আমার শিষ্যত্ব বা বাইয়াত গ্রহণ করবে, তারা চুরি করবে না, মিথ্যা বলবে না, অন্যের গীবত করবে না, জ্বেনা-ব্যাবিচার করবে না, অপরের হক নষ্ট করবে না, এসব থেকে বিরত থাকলেই কামেলে ইনসান হতে পারবে।

৬. পরম আত্মার সঙ্গে নিজের আত্মার যোগসূত্র করা প্রতিটি মানুষের অবশ্যই কর্তব্য এবং সে বিদ্যাই সর্বোৎকৃষ্ট বিদ্যা, যার মাধ্যমে মহান আল্লাহতা’লার দর্শন লাভ করা যায়।

৭. কামেল পীরের তাওয়াজ্জুহ বলে মুরিদের মুর্দা দিল জিন্দা হয়ে, প্রকৃত সত্যকে অনুধাবন করতে পারে। মুর্দা দিল জিন্দা হলে ওই দিলে আল্লাহ ও রসুলের (সঃ) খাস মহব্বতের ফয়েজ ওয়ারেদ (বর্ষিত) হতে থাকে। কেবল তখনই মানুষ হুজুরি দিলে নামাজ আদায় করতে সক্ষম হয়।

৮. শুধু মুখে আল্লাহর নাম আর অন্তরে দুনিয়ার চিন্তা, এমন নামাজে কোন ফল নেই। তাই রসুলুল্লাহ (সঃ) বলেন, ‘নামাজই নয় হুজুরি দিল ব্যতীত’। সুতরাং নামাজ পড়বার সময় খেয়াল-চিন্তা সব দিক থেকে ফিরিয়ে নিজের ক্বলবের ভিতর ডুবিয়ে রাখো। যতক্ষণ খেয়াল ক্বলবে থাকবে, ততক্ষণ আল্লাহতা’লাকে মনে থাকবে যখনই খেয়াল ক্বলব থেকে বের হয়ে যাবে, তখনই আল্লাহকে ভুলে যাবে। নামাজের সময় যদি আল্লাহকেই মনে না থাকে, তবে কাকে সিজদা করছো? তা চিন্তা করে দেখ। আল্লাহর হুজুরে তোমরা অল্প সময়ের জন্যই দাঁড়িয়ে থাকো, সুতরাং এ সামান্য সময়ের জন্য মন ও মুখ এক করে আল্লাহতা’লাকে সিজদা করো।

৯. রসুলুল্লাহ (সঃ)-এর মহব্বতই প্রকৃত ইমান। রসুলুল্লাহ (সঃ)-এর মহব্বত যার অন্তরে যতটুকু তার ইমানও ততটুকু।

১০. যদি তোমরা আল্লাহ ও রসুল (সঃ)-এর মুহব্বত অন্তরে সৃষ্টি করতে চাও, তবে কামেল পীরের সহচার্য সন্ধান কর।

১১. ক্বলব আল্লাহতা’লার ভেদের মহাসমুদ্র এবং এ ক্বলবের মধ্যেই আল্লাহতা’লার নিদর্শনসমূহ লাভ করা যায়। যেমন ক্ষুদ্র একটি বটের বীজের মধ্যে লুকিয়ে থাকে আর একটি বটগাছ। তেমনি আল্লাহতা’লা মানব দেহের মধ্যে লুকিয়ে থাকেন। কিন্তু নফসের কু-খায়েশের কারণে মানব দেহের অন্তরাত্মা ময়লাযুক্ত হয়ে যায়। আল্লাহতা‘লার ভেদের নিদর্শন সমূহ অনুধাবন করতে হলে এবং তাঁর সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন করতে হলে, ক্বলবকে আয়নার মত স্বচ্ছ করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহতা‘লার সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন করতে না পারবে, ততক্ষণ তোমার আত্মা অতৃপ্ত থাকবে এবং যখন তাঁর সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন করতে পারবে, তখন তোমার অন্তর এক অনাবিল শান্তির অধিকারী হবে।

১২. যখন তুমি তোমার ময়লা দিলকে পীরে কামেলের পবিত্র দিলের সঙ্গে মিশাতে পারবে, সে মুহূর্তে তোমার অন্ধকার দিল আল্লাহর নূরে আলোকিত হবে।

১৩. মুর্শিদে কামেলের পথই প্রকৃত সত্যের পথ এবং গজব থেকে বাঁচার উপায়।

১৪. আল্লাহতা’লাকে পাওয়ার জন্য অনেক দুঃখ-কষ্ট, ত্যাগ তিতিক্ষা ও লোক নিন্দা সহ্য করতে হয়।

(Visited 471 times, 1 visits today)
Share