বাদল চৌধুরী
জীবন পরিক্রমায় মানুষের দায়িত্ব অপরিসীম। এসব দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মানুষ ময়লাযুক্ত হয়। আর মানুষের মন্দ স্বভাবগুলো আত্মার ভিতরে প্রবেশ করে আত্মার সামনে একটা কালো পর্দা ঝুলিয়ে দেয়। ফলে মানুষ মহান আল্লাহতায়ালার দীদারলাভ থেকে বঞ্চিত হয়। এ প্রসঙ্গে আমার প্রাণপ্রিয় মুর্শিদ খাজাবাবা কুতুববাগী কেবলাজান বলেন, ‘বাবারা, অযত্নে পতিত লোহায় মরিচা ধরে যেমন এক সময় লোহার সকল গুনাগুন বিনষ্ট হয়ে যায়; তেমনই মানুষের মন্দ স্বভাবের ফলে আত্মায় মরিচা পরলে সকল গুনাগুন হারিয়ে কালিমালিপ্ত হয়ে আত্মাও কলংকযুক্ত হয়ে যায়’। তাই মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআন মাজিদে বলেন, ‘নিষ্কলঙ্ক আত্মাসহকারে আল্লাহর দরবারে আগমনকারী ব্যতীত আর কেউ মুক্তি পাবে না’। সুতরাং আমরা যদি আত্মশুদ্ধি অর্জন করতে না পারি, তাহলে আল্লাহর দীদারলাভ করা সম্ভব নয়। আত্মা হলো আধ্যাত্মিক সত্ত্বা। আর আত্মার আধ্যাত্মিকের অমরতা নির্দেশ করে। আত্মা দৈহিক অঙ্গসমূহকে নিয়ন্ত্রণ করে সমগ্র জ্ঞানের মধ্যে সংহতি স্থাপন করে। মৃত্যুর পর আত্মা দেহের বন্ধন মুক্ত হয়ে অন্য জগতে প্রস্থান করে। আর একমাত্র পরিশুদ্ধ আত্মাই আল্লাহর কুদরত দর্শন করতে সক্ষম হবে। আত্মাকে জানতে হলে নিজেকে চিনতে হবে।
রাসূলপাক (সঃ) বলেন, ‘মান আরাফা নাফসাহু ফাকাদ আরাফা রাব্বাহু’।
অর্থ : যে নিজেকে চিনেছে, সে তার প্রভুকে চিনেছে। কর্মের মাধ্যমে নিজেকে চেনা জানার চেষ্টা করাই হল ধর্ম আর ধর্ম হলো মুক্তির পথ। বিশ্বঅলি খাজাবাবা কুতুববাগী বলেন, ‘কর্ম ও আধ্যাত্মিক সাধনার মাধ্যমে নিজেকে চেনা জানার মাঝেই নিহিত রয়েছে মুক্তির পথ’। এই মুক্তির পথ খুঁজে বের করা আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্য অনেক কঠিন। নিজেকে চেনা-জানার একমাত্র সহজ পথ হলো কামেল মুর্শিদ বা পীরের হাতে বাইয়াত গ্রহণ করা। একমাত্র আল্লাহর অলিবন্ধু কামেলপীর-মুর্শিদ-ই পারেন অতি সহজে সেই কাক্সিক্ষত পথের দিশা দিয়ে আত্মাকে বিশুদ্ধ করে মুক্তির ব্যবস্থা করে দিতে। আত্মা বিশুদ্ধ হলেই কেবল দিল-অন্তরে হুজরী আসবে। আর হুজরী দিলে ইবাদত করতে পারলেই মহান আল্লাহতায়ালার দীদারলাভ সম্ভব।