আমার ভাবনা

মোঃ শরিফুল আলম

আমার দরদী পীর আরেফে কামেল মুর্শিদে মোকাম্মেল শাহসুফি আলহাজ্ব মাওলানা খাজাবাবা কুতুববাগীর পবিত্র কদমে চুম্বন রেখে আমি অধম গোনহগার মনের কিছু কথা বলছি। আসলে আমি কোনো লেখক, কবি বা সাহিত্যিক নই। আমার এই লেখার মধ্যে কোনো ভুল বেয়াদবি থাকলে ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন, সবার কাছে এই কামনা ।

সেই ছোটবেলার কথা, নামাজ পড়তাম, রোজা রাখতাম, বাড়ি থেকে স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে মনে মনে আল্লাহ আল্লাহ জিকির করতাম; কিন্তু তখনও জানতাম না আত্মশুদ্ধি, দিল জিন্দা এবাদতে হুজুরী বা নামাজে হুজুরী কী? তৃষিত মন নিয়ে অন্ধের মতো নামাজ পড়তাম, জিকির করতাম। এভাবে দিনে দিনে বড় হলাম আর মনের ভিতর আল্লাহ-রাসুল (সাঃ)-কে চেনা ও জানার প্রবল আগ্রহ দানাবাঁধতে থাকে। নামাজের ভিতর কল্পনায় বিভিন্ন ধরনের ছবি ভেসে উঠতো, সঠিকভাবে নামাজ আদায় করতে পারতাম না। আল্লাহ আল্লাহ জিকির করতাম কোনো স্বাদ পেতাম না।

২০১১ সাল আমার জীবনের এক পরম সৌভাগ্যের বছর। একদিন আমার অফিসে আনোয়ার ভাইজান আসেন একজন মহাপুরুষের নূরানী জ্যোতির্ময় চেহারা মোবারক দর্শনের দাওয়াত নিয়ে। ব্যবসায়িক অনেক ঝামেলা থাকার কারণে আসব আসব বলেও সময় করে আসা হচ্ছিল না। আসতে একটু দেরি হলেও একদিন আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে কুতুববাগ দরবার শরীফ ৩৪, ইন্দিরা রোড, ফার্মগেটে আসি। সেই সময়টি ছিল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১০.৩০ মি:। দরবার শরীফের তিন তলায় দেখা মিলল জ্যেতির্ময় সুদর্শন এক মহাপুরুষের। তাঁকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ পাক ও রাসুল (সাঃ)-এর কথা স্মরণে এলো আমার। না জানি রাসুল (সাঃ) আরও কত সুন্দর! চোখ জুড়িয়ে গেল। প্রাণ ভরে গেল এক অনাবিল শান্তিতে। মনে মনে ভাবলাম এইতো সেই মহাপুুরুষ যিনি প্রকৃত নায়েবে রাসুল। তখন মাইকেল মধুসূধন দত্তের লেখা কবিতার লাইন মনে পড়লোÑ ‘বহু দেশে দেখিয়াছি বহু নদ দলে, পিপাসার এ তৃষ্ণা মিটে কার জলে।’ আত্মতৃপ্ত হয়ে বাসায় ফিরে এলাম। পরদিন সকালে আমার স্ত্রী আমাকে বললো, গত রাতে কুতুববাগ দরবার শরীফের তবারক খেয়ে আসার পর আমার সেই কঠিন রোগের কোনো লক্ষণই আর শরীরে নেই। আলহামদুলিল্লাহ অদ্যবধি আমার স্ত্রী সম্পূর্ণভাবে সুস্থ আছেন।

বর্তমান জামানর নকশ্বন্দীয়া- মোজাদ্দেদীয়া তরিকার একমাত্র খেলাফতপ্রাপ্ত পীর আমার দরদী মুর্শিদের দরবারে আসা-যাওয়া শুরু করলাম। প্রতি বৃহস্পতিবার গুরু রাত্রিতে বাবাজানের কাছে শরীয়ত, তরীকত, হাকিকত ও মারেফাতের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা শুনতে শুনতে আমার অপবিত্র আত্মায় পবিত্রতার ছোঁয়া অনুভব করলাম। মরা দিলে আল্লাহ নামের জিকির শুরু হলো এবং নামাজেও হুজুরী পয়দা হলো। আর ইবাদতের পর জাগতিক স্বাদ পেতে লাগলাম। হে দরদী মুর্শিদ আপনার পদতলে এসে জন্ম আমার স্বার্থক হলো। জীবন আমার ধন্য হলো। পরিতৃপ্ত আমার হৃদয়। আজ আমি প্রতি নিঃশ্বাসে অনুভব করি আমার ইবাদত-বন্দেগীর অতুলনীয় স্বাদ। শারীরিক-মানসিক পরিশুদ্ধতা ও সুস্থতা, এ সবই আল্লাহপাক দান করেছেন, আমার দরদী মুশির্দ কুতুববাগীর উসিলায়।

এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে বলিÑ যা না বললে নিজেকে বড়ই অকৃতজ্ঞ বলে মনে হবে। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ৯ তারিখ রবিবার। আমার জন্মস্থান জমালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ থানার এক অতি সৌভাগ্যের দিন। কারণ আমি গোনাহগারের দাওয়াতে ঐ দিন আমার প্রাণপ্রিয় আধ্যাত্মিক মহাপুরুষ, বর্তমান যুগের শ্রেষ্ঠ হাদী, জামানার মোজাদ্দেদ, গাউসুল আজম শাহসুফি খাজাবাবা কুতুববাগী ক্বেবলাজান হুজুরের শুভ আগমন ঘটে। সাবেক তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী জনাব আবুল কালাম আজাদ ও সাবেক সংসদ সদস্য জনাব রশিদুজ্জামান মিল্লাতসহ সর্বস্তরের জনগণ আমার দরদী মুর্শিদ কেবলাজান হুজুরকে দেওয়ানগঞ্জের মাটিতে অত্যন্ত আদব ও মহব্বতের সঙ্গে সুস্বাগত জানান। সুস্বাগত, সুস্বাগত হে আল্লাহর বন্ধু, সুস্বাগত সুস্বাগত হে নায়েবে রাসুল, হে দরদী মুর্শিদ সুস্বাগত আপনাকে দেওয়ানগঞ্জের মাটিতে সুস্বাগতম।

যমুনা নদীর ভাঙনে মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন দেওয়ানগঞ্জ রেল স্টেশন, জিল বাংলা সুগার মিল, উপজেলা পরিষদসহ হাজার হাজার ঘরবাড়ি ও আবাদি জমি। ৯ সেপ্টেম্বর রবিবার বাদ মাগরিব কুতুববাগী কেবলাজান হুজুরের শুভ আগমন উপলক্ষে এ কে এম কলেজ মাঠে এক বিশাল ইসলামী মহাসম্মেলন ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। উক্ত মাহফিলে উপস্থিত হাজার হাজার মানুষের পক্ষ থেকে স্থানীয় মেয়র, আলেম-ওলামা ও মরুব্বিগণ কুতুববাগী কেবলাজান হুজুরের কাছে যমুনা নদীর ভাঙন বন্ধের জন্য দোয়া চাইলেনÑ আল্লাহ পাকের খাস বন্ধু আমাদের দরদী পীর খাজাবাবা কুতুববাগী কেবলাজান দোয়া করেন। আলহামদুল্লিলাহ, সেই দিনের পর থেকে আজ পর্যন্ত সেখানে নদীভাঙন বন্ধ। নদীতে চর জেগে উঠেছে, যা এতদিন শত চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি, শুধু আল্লাহর এক অলির দোয়ার বরকতে তা সম্ভব হয়েছে। খাজাবাবা কুতুববাগী কেবলাজান হুজুরের নিকট আমার দেওয়ানগঞ্জবাসী তথা জামালপুরবাসী চিরকৃতজ্ঞ, চিরঋণী।

হে আল্লাহর অলি! আপনি তো কোনো বিনিময় চান না। আর বিনিময় দেওয়ার মতো সাধ্য আমাদের নেই। আমরা যেন কুতুববাগ দরবার শরীফে দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ তরিকা নকশ্বন্দিয়া-মোজাদ্দেদীয়া তরিকার সুশিতল ছায়াতলে দলে দলে অন্তরর্ভুক্ত হয়ে ইহকালে শান্তি ও পরকালে মুক্তি অর্জন করতে পারি। হে আল্লাহ তোমার অলি-বন্ধু আমাদের দরদী পীর খাজাবাবা কুতুববাগীর উসিলায় আমাদের কবুল করে নিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার সুযোগ দাও। আমিন।

(Visited 165 times, 1 visits today)
Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *