এম এইচ মোবারক
আমরা যারা তরিকায় বিশ্বাস করি, এবং দৃঢ়তার সাথে এটাই মানি যে, তরিকার পথই হচ্ছে একমাত্র পথ যা দয়াল নবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) দেখিয়েছেন। এই সত্য মতবাদে বিশ্বাসীগণের উদ্দেশ্যেই আমি কিছু বলতে চাচ্ছি।
আমি মনে করি যতোটা সম্ভব আপন পীর বা গুরুর সানিধ্যে আসা-যাওয়া করা যায় ততোই আমাদের জন্য মঙ্গল হবে। আমরা অনেক সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ কর্মের জন্য বা নিজেদের মধ্যে অলসতার বশে কিছু দিন বিরতি দিয়ে পীরের কদমে আসি। এ ক্ষেত্রে বলবো এতে করে আমাদের নসিব পিছিয়ে যায়। আমাদের আত্মা দুর্বল হয়ে পরে। এমনকি আমাদের ঈমানের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। যদি স্বয়ং পীর আমাদের মানসিক হাল ধরে না রাখেন। আমাদের মনের হলুদ রংটা ঘোলাটে হয়ে যায়। যদি তাই হয় তবে এটা কি আমাদের জন্য ক্ষতিকারক নয়? আমরা গুরুর সান্নিধ্যে যত বেশি বেশি আসতে পারবো আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের পথ তত বেশি সুন্দর ও সুগম হবে বলে আমি মনে করি। কেননা পীরমুর্শিদগণ চায় তাঁর অনুসারি বা ভক্তরা বেশি বেশি তাঁর সান্নিধ্যে আসুক এবং এপার- ওপারের সফলতা লাভ করুক। পীরভাইয়েরা একটু চিন্তা করে দেখুন, একজন কামেল গুরুর আগমন কেনো হয়? কি কাজ করেন একজন কামেল মুর্শিদ? আপনার আমার মত পাপীতাপী গুনাহগার নালায়েক নাফরমানদের হেদায়াতের জন্য মহান আল্লাহর হুকুমে কামেল গুরুরা আমাদের মাঝে আসেন। তো আমরা যদি এই বিষয়টি আমাদের জীবনের মূল বিষয় হিসেবে বিবেচনা করতে পারি তাহলেই আমাদের জীবন স্বার্থক হবে, সফলতা নেমে আসবে জীবনের প্রতিটি বাঁকে বাঁকে। তখন কোন কাজ বা বিষয়ই আর আপনার আমার কাছে তেমন একটা কঠিন বলে মনে হবে না। কারণ, আপনার মাথার উপরে যদি আপন গুরুর নজর বা হাত থাকে, তবে মনে রাখবনে দুনিয়ার কোন শক্তিই আপনাকে আর রুখতে পারবে না। তাই যতটা সম্ভব আপনি আমি ও আমরা আপন গুরুর সান্নিধ্যে বেশি বেশি আশার চেষ্টা করবো।
একটা বিষয় আমাকে খুব ভাবিয়ে তোলে! আমরা তরিকার মানুষেরা অনেক সময় বলে থাকি, আরে আমিতো আমার পীরকে চোখ বন্ধ করলেই পাই। হাকিকতেই আমার পীর আমার সকল সমস্যা সমাধান করে দেন। এ কথা আমিও বিশ্বাস করি। কিন্তু এটা কার জন্য, কোন স্তরের মুরিদের জন্য? এটা মনে হয় একমাত্র আপনপীরই ভালো জানেন। এ ধরণের কথা শুনলে অনেক সাধারণ মুরিদ-জাকের ভাইদের মন হালকা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বলে আমি মনে করি। আমার কথা হচ্ছে আপন পীর আপনাকে দয়া করে ঐ স্তর দান করেছেন! তবে এটা আর সকল ভক্তের জন্য নাও হতে পারে। তাই সর্বসম্মতিক্রমে পীরকে সামনে থেকে দেখলে যতটা শান্তি ও ফয়েজ উপলদ্ধি করা যায়, দূর থেকে সবার পক্ষে তা সম্ভব কি? তাই সবচেয়ে সহজ ও সরল উপায় হচ্ছে সামনা সামনি পীরের থেকে ফয়েজ আহরণের চেষ্টা করা। সেই আমল বা জ্ঞানের তেজ বা ঝাজ যে কতোটা শক্তিশালী, তা একমাত্র যে বা যারা এই জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছেন তারাই বুঝবেন।
আমি আমার শায়েখের সামনে দাঁড়াবো এতেই তো মন-দুনিয়ার সকল তৃপ্তি লুকায়িত রয়েছে। যদি দয়া করে আপন শায়েখ আমার মতো গুনাহগারের দিকে তাঁর রহমতের দৃষ্টি একবার দেন, তবেই তো আমার সকল পাপমোচন হয়ে যায়। মনে হয় এইতো আবার নতুন করে জন্ম নিলাম। শুধু এটুকুই নয়, তিনি যদি অপরাধ ও অপকর্মে ভরা এই পচা শরীরকে তাঁর পবিত্র হাতে একটু ছুয়ে দেন, মনে হয় তখন থেকেই আমি বেহেস্তের কোন একটা অংশ হয়ে যাই। মাঝেমধ্যে পীর মুরিদের মধ্যে চোখা-চোখি হয়ে থাকে তখন মনে হয় সমস্ত শরীরটা একটা বরফের টুকরাতে পরিণত হয়ে যায়। তবে এটা যার যার ব্যক্তিগত অনুভূতি। আর এই রহমতগুলো তখনই হয়, যখন আমাদের আপন গুরু বা আপন মুর্শিদ বর্তমান জামানার মোজাদ্দিদ খাজাবাবা কুতুববাগী কেবলাজানের সান্নিধ্যে এসে থাকি। আমি এ লেখার মধ্যে যা কিছু লিখলাম বা বললাম সবই নগদ হিসেবের কথা। কথায় বলে বাকির নাম ফাঁকি। বাকি মানে সময় ক্ষেপণ আর কিছু তিক্ততা। জেনে-শুনে কেনো আমরা সময় ক্ষেপণ বা তিক্ততার মাধ্যম বেছে নিবো? তাই আসুন যতো বেশি বেশি সম্ভব আপন মুর্শিদের সান্নিধ্যে আসা-যাওয়া করবো। তাতে আমরা বেশি দয়া পাবো, দ্রুত নিষ্পাপ হতে পারবো, দুনয়িা ও আখিরাতে উভয় দিকেই সাবলম্ভী হতে সক্ষম হবো। পরিশেষে আমার মুর্শিদগুরু খাজাবাবা কুুতুববাগী কেবলাজানের কাছে আমি গুনাহগারসহ সকল পীরভাই ও পীরবোনেরা যেনো আরও বেশি বেশি গুরু দর্শন ও গুরু দক্ষিণা দিতে পারে সেই সাহায্য ও দোয়া চাই।